নামে স্বর্গের উদ্যান। কিন্তু সেই এলাকায় ঘাঁটি গেড়েই দিনের পর দিন নারকীয় কাণ্ডকারখানা চলেছে। এএনভিসি জঙ্গি সংগঠনের সদর দফতর ইডেনের নাম শুনলে ভয় পেত মানুষ। কিন্তু এ বার পশ্চিম গারো পাহাড়ের ইডেনেকে তার আগের মহিমায় ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগ নিয়েছে প্রাক্তন জঙ্গিরাই।
গারো পাহাড়ের জঙ্গি সংগঠন এএনভিসি (বি)-র সব হত্যা, অপহরণ, তোলাবাজি চলত ওই 'ইডেন বাড়ি' শিবিরকে কেন্দ্র করেই। আর তাতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দলের চেয়ারম্যান বার্নার্ড সি মারাক। কিন্তু ২০১৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর অস্ত্র জমা দিয়ে সংঘর্ষবিরতিতে আসার পরে জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের বসে থেকে হাতে-পায়ে খিল ধরার উপক্রম। সেই সঙ্গে ছিল বিকল্প রোজগারের চিন্তাও। কারণ মূল স্রোতে এলেও প্রাক্তন জঙ্গিদের ভাল কাজ জোটাও মুশকিল। প্রতিশ্রুতি মতো পুনর্বাসন প্যাকেজও মেলেনি সরকারের তরফে। তাই, সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশে থাকা নিজেদের সদর দফতরকেই পর্যটনস্থলে বদলে ফেলার পরিকল্পনা করেন বার্নার্ড।
এমনিতেই পাহাড়, লাল মাটি আর পাহাড়ি গানোল নদীতে ঘেরা ইডেন বাড়ি প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। এখন সেখানেই গারো হেরিটেজ গ্রাম গড়ার কাজ চালাচ্ছেন প্রাক্তন জঙ্গিরা। শুধু পর্যটকদের জন্যই নয়, বিয়ে, জন্মদিনের মতো যে কোনও অনুষ্ঠানেও ইডেন বাড়ি ভাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।
কটেজে মিলবে কাপ্পা, গান, নাকামের মতো দেশীয় খাবার, পানীয়। শোনানো হবে স্থানীয় সঙ্গীত। তার পাশাপাশি মিলবে আধুনিক সুযোগ-সুবিধে। প্রাথমিক পরিকাঠামোর কাজ শেষ। এখন ইডেন বাড়িতে উদ্যান, প্রাকৃতিক সরোবরের সৌন্দর্যায়ণের কাজ চলছে। এলাকার শান্তি বিঘ্নিত হয় এমন কিছু নিয়ে সেখানে প্রবেশ চলবে না। জঙ্গিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসীরাও আশপাশে মেলা সামগ্রী দিয়েই ইডেন সাজিয়ে তুলছেন। বার্নার্ডের ইচ্ছে সিনেমার শুটিং, নাটকের কর্মশালার মতো সৃজনশীল কাজ বেশি করে হোক এক সময়ের ধ্বংসলীলার কেন্দ্র ইডেনে।