এস আর দারাপুরী
এস আর দারাপুরী এখনও হাসছেন। জেলের গরাদ তাঁর হাসি কেড়ে নিতে পারেনি। উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন আইজি, ১৯৭২ ব্যাচের এই আইপিএস-কে গ্রেফতার করে জেলে পুরেছে যোগী আদিত্যনাথের পুলিশ। লখনউয়ে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন ফেটে পড়ার পরে গত ১৯ তারিখ অভিনেত্রী সদাফ জাফর, দারাপুরী এবং আরও ৫ জনকে গ্রেফতার করে লখনউ জেলে রাখা হয়েছে। ২৪ তারিখ নিম্ন আদালতে তাঁদের জামিনের আবেদন জমা পড়ে। কিন্তু পরের দিন থেকেই বড়দিনের ছুটি পড়ে গিয়েছে আদালতে। অতএব নববর্ষের দিনটাও জেলেই কাটাতে হবে ওঁদের।
তবু হাসিমুখে লড়ে যাচ্ছেন ৭৬ বছরের ক্যানসার-রোগী দারাপুরী। যোগীর আমলে এর আগেও গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। এ বার ১৯ তারিখ ওঁকে, সমাজকর্মী মহম্মদ শোয়েব আর সন্দীপ পান্ডেকে প্রথমে গৃহবন্দি করেছিল পুলিশ। তার পর শোয়েব আর দারাপুরীকে গ্রেফতার করে ১৫টিরও বেশি ধারায় মামলা রুজু করেছে। দারাপুরীর পৌত্র সিদ্ধার্থ দারাপুরী তার তিন দিন পরে একটি ফেসবুক পোস্ট লেখেন। সেখানে তিনি মনে করিয়ে দেন, দারাপুরী এমন এক জন পুলিশ অফিসার ৩০ বছরের কেরিয়ারে যাঁর সার্ভিস রিভলভার থেকে একটি গুলিও বেরোয়নি। সশস্ত্র সমাজবিরোধীদের দল তাঁর সামনে আত্মসমর্পণ করেছে, তিনি একা তাদের মুখোমুখি হয়েছেন। ‘এনকাউন্টার’-এর রাস্তায় হাঁটেননি। দুষ্কৃতীরা তাঁর জিপ লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়েছে, গুলিতে জবাব দেননি তিনি।
আরও পড়ুন: জেটলির অভাব বোঝা যাচ্ছে, খেদ বেঙ্কাইয়ার
অম্বেডকরের অনুগামী দারাপুরী পুলিশের মেসে জাতপাতের বিভাজন দূর করিয়েছেন। অবসরের পর সমাজসেবা আর সামাজিক আন্দোলনে যুক্ত হন। জঙ্গি তকমা দিয়ে নিরীহের উপরে নির্যাতনই হোক বা অরণ্য থেকে উচ্ছেদের মুখ পড়া জনজাতি, সকলের লড়াইয়ে শামিল হয়েছেন। ইতিমধ্যে পুলিশ হেফাজতে সদাফকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। তার পরেও সদাফ বলেছেন, ‘‘জামিন পাই আর না পাই, লড়াই চলবে।’’ আজ প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা এবং সদাফ দারাপুরীর বাড়ি যাচ্ছিলেন। পুলিশ তাঁকে আটকায়।