সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। —ফাইল ছবি।
লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি একার জোরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ভোটের সময় আরএসএসের নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। আজ আরএসএসের প্রান্ত প্রচারকদের তিন দিনের সম্মেলনের পরে সঙ্ঘের প্রধান মুখপাত্র সুনীল অম্বেকর জানিয়ে দিলেন, জনতা যে রায় দিয়েছে, সকলেরই সেই রায়কে সম্মান জানানো উচিত।
এ বারের নির্বাচনে বিজেপির আসন আগের তুলনায় কমার পরেই সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত ‘সেবক’-এর ‘অহঙ্কার’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বকে বার্তা দিয়ে বলেছিলেন, সত্যিকারের সেবক হতে গেলে অহঙ্কার থাকলে চলবে না। বিরোধীদের বিরোধী পক্ষ নয়। শুধুমাত্র প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখতে হবে।
এর পরে প্রান্ত প্রচারকদের বৈঠকে ভাগবত কী বলেন, তা নিয়ে কৌতূহল ছিল। কিন্তু আজ রাঁচীতে তিন দিনের বৈঠক শেষ হলেও সেখানে ভাগবত কী বলেছেন, তা আরএসএস প্রকাশ্যে আনেনি। আরএসএস নেতৃত্ব শুধু প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছে, সরসঙ্ঘচালক জনসংখ্যার ভারসাম্য নিয়ে কথা বলেছেন। বাকি তিনি কী বলেছেন, তা গোপন রাখা হয়েছে। বিজেপি-আরএসএসের নতুন সমীকরণ নিয়ে জল্পনা ঠেকাতেই এই কৌশল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ভোটের ফল নিয়ে বৈঠকের শেষে সঙ্ঘের প্রধান মুখপাত্র বলেন, ‘‘সঙ্ঘ সরাসরি ভোটের কাজে যোগ দেয় না। মানুষের মতে সচেতনতা তৈরির কাজ করে। এ বারও স্বয়ংসেবকরা ছোট ছোট গোষ্ঠীর মাধ্যমে মানুষের মনে সচেতনতা তৈরির কাজ করেছে। গণতন্ত্রে মানুষই সবার উপরে। সব দল নিজের নিজের কথা জনতার সামনে বলেছে। জনতা রায় দিয়েছে। সকলের সেই রায়কে সম্মান জানানো উচিত।’’ ৩১ অগস্ট থেকে কেরলে আরএসএস-বিজেপির সমন্বয় বৈঠক হবে।
লোকসভায় বিজেপির সাংসদ কমলেও আরএসএস আজ জানিয়েছে, সঙ্ঘের সংগঠন ফুলে-ফেঁপে উঠছে। বিপুল সংখ্যক তরুণ আরএসএসের মতাদর্শের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে যোগাযোগ করছেন। ‘জয়েন আরএসএস’ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রতি বছর এক লক্ষের বেশি মানুষ যোগাযোগ করছেন। এ বছর থেকে আরএসএস প্রশিক্ষণের পাঠ্যক্রমে বদল এনেছে। চল্লিশ বছরের কমবয়সি এমন ২০ হাজার তরুণ এই বছরে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। আগামী বছর, ২০২৫-এর বিজয়া দশমীতে আরএসএস একশো বছর পূর্ণ করবে। গ্রাম ও শহরের প্রতিটি কোণে আরএসএস দৈনিক শাখা খোলার লক্ষ্য নিয়েছে।
দু’দিন আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থা জারির দিনকে ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ বলে ঘোষণা করেছিল। বিরোধী শিবির থেকে তখন পাল্টা অভিযোগ ওঠে, আরএসএস নিজেই জরুরি অবস্থার পক্ষে ছিল। তদানীন্তন সরসঙ্খচালক বালাসাহেব দেওরাস জরুরি অবস্থাকে সমর্থন করেছিলেন। আজ আরএসএস মুখপাত্র বলেন, ‘‘জরুরি অবস্থা জারি করা ভুল ছিল। গণতন্ত্রে এমন হওয়া উচিত নয়। জরুরি অবস্থার বিরোধিতায় আরএসএস লড়াই করেছিল। সঙ্ঘের কর্মীদের অত্যাচারও সহ্য করতে হয়েছিল।’’