কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের কোর্টে বল ঠেলে দিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করে তিনি জানান, একমাত্র তিনিই পারেন কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করতে। এ বার তাঁর আর্জি, সব কাশ্মীরিদের এক দৃষ্টিতে দেখা বন্ধ করুক সংবাদমাধ্যম। তাঁরা সকলে পাথর ছোড়েন না।
আজ জম্মু ও কাশ্মীরের রীতি মেনে শ্রীনগরে গ্রীষ্মকালীন সচিবালয় খুলল রাজ্য প্রশাসন। সেখানেই সাংবাদিক বৈঠকে মুফতি বলেন, ‘‘মনে রাখতে হবে, কাশ্মীরের সব যুবকই পাথর ছোড়েন না। সেটা সংবাদমাধ্যমের মনে রাখা উচিত। গোটা রাজ্যের মানুষের প্রতি বিদ্বেষ তৈরি হয় এমন কোনও আলোচনা বা অনুষ্ঠান প্রচার করা উচিত নয়।’’
আজ মুফতি জানান, এটাই প্রথম নয়। ১৯৪৭ সাল থেকে নানা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে উপত্যকা। এর চেয়েও খারাপ সময় এসেছে। পঞ্চাশের দশকে গণভোট চেয়ে আন্দোলনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে মুফতি বলেন, ‘‘হিংসার মাধ্যমে কোনও সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।’’ তাঁর মতে, অনেক বার উপত্যকায় অশান্তি হয়েছে। কখনও জঙ্গি সমস্যা, কখনও বা বিক্ষোভকারীদের বাড়বাড়ন্ত। এক সময়ে কিন্তু শান্তি ফিরেছে। পরিস্থিতি জটিল, তবু প্রত্যেক সমস্যারই সমাধান থাকে।
আরও পড়ুন:দিল্লিতে পাক দূত শরিফের ঘনিষ্ঠ মামুদ
সচিবালয় খোলার পরে রাজ্যপাল এন এন ভোরাকে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কথা জানান সেনা ও পুলিশের কর্তারা। পরে এক সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য পুলিশের আইজি সৈয়দ জাভেদ মুজতবা গিলানি জানান, দক্ষিণ কাশ্মীরে সাম্প্রতিক ব্যাঙ্ক ডাকাতির পিছনে রয়েছে জঙ্গি সংগঠন লস্কর ও হিজবুল মুজাহিদিন। ওই ডাকাতিগুলির মূল চক্রী জঙ্গি নেতা আবু আলি ইতিমধ্যেই বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে খতম হয়েছে। পুলওয়ামায় পিডিপি-র জেলা সভাপতি খুন হওয়ার পিছনেও জঙ্গিদেরই হাত রয়েছে দাবি করেন তিনি। এই ঘটনায় এক আইনজীবী-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই আইনজীবীই পিডিপি নেতার গতিবিধি সম্পর্কে জঙ্গিদের তথ্য দিয়েছিলেন বলে দাবি গিলানির। সম্প্রতি ৯৫ জন স্থানীয় যুবক জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিয়েছে বলে জানান তিনি।
পাথর ছোড়া ও বিক্ষোভের ঘটনা মূলত দক্ষিণ কাশ্মীরেই সীমাবদ্ধ বলে জানিয়েছেন গিলানি। তাঁর মতে, কিছু ক্ষেত্রে পাথর ছুড়তে যুবকদের টাকা দেওয়া হচ্ছে।
এ দিকে, সোমবারই নিরাপত্তার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হল শ্রীনগর-মুজফ্ফরনগর বাস পরিষেবা। সোমবার সকাল সাতটায় ১৪ জন যাত্রী নিয়ে শ্রীনগর থেকে রওনা দেয় বাসটি। তবে বারামুলা জেলার কাছে বাসটিকে থামিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। পরে বেলা ৩টে নাগাদ সালামাবাদ সুবিধাকেন্দ্র থেকে অপেক্ষাকারী যাত্রীদের ফের মুজফ্ফরনগরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। সূত্রের খবর, কাছের উরুসা গ্রামে এ দিন তল্লাশি চালায় সেনা। তবে এ বিষয়ে সেনা অফিসাররা বিস্তারিত কিছু জানাতে চাননি।