ফাইল চিত্র।
পাঁচ রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা ভোটের জেরে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে আদালত থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞ মহল। এই পরিস্থিতিতে আগামিকাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। কোভিডের আবহে আসন্ন নির্বাচনই সেই বৈঠকের আলোচ্য হতে চলেছে।
ওমিক্রনের আবির্ভাবে করোনা সংক্রমণের ভয় যে আবার বাড়ছে, বিভিন্ন রাজ্যের পদক্ষেপে ক্রমশ তা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আগামিকাল থেকে দিল্লি এবং মঙ্গলবার থেকে কর্নাটক নৈশ কার্ফু চালু করে দিচ্ছে। নতুন বছর ঘিরে সমস্ত প্রকাশ্য অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ হয়েছে কর্নাটকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রশাসন কড়া না হলে দায়িত্বজ্ঞানহীন নাগরিকদের কোনও মতেই করোনার বিপদ সম্পর্কে সচেতন করা সম্ভব নয়। গত কাল কলকাতার পার্ক স্ট্রিটে যেমন মাস্কহীন জনসমুদ্র দেখা গিয়েছিল, তেমনই বড়দিনের থিকথিকে ভিড়ে ভরে গিয়েছিল মুম্বইয়ের জুহু বিচও।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসাবে, সারা দেশে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা আজ বেড়ে হয়েছে ৪২২। ওমিক্রন সংক্রমণে রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম তিনটি স্থানে রয়েছে যথাক্রমে মহারাষ্ট্র (১০৮), দিল্লি (৭৯) এবং গুজরাত (৪৩)। গত ২৪ ঘণ্টায় মহারাষ্ট্রে নতুন কোভিড রোগীর সংখ্যা ২১ শতাংশ বেড়েছে। আক্রান্ত ৯২২ জন (এঁদের মধ্যে ৭৫৭ জন মুম্বইয়ের), যা গত সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ দৈনিক সংক্রমণ। আজ আরও দুই রাজ্য, হিমাচলপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশে প্রথম বার ওমিক্রন-আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। হিমাচলে কানাডা-ফেরত এক রোগীর নমুনায় ওমিক্রন পাওয়া গিয়েছে। আর গত ৪৫ দিনের মধ্যে বিদেশ থেকে মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে ফেরা আট জনের নমুনায় করোনার অতি-সংক্রামক স্ট্রেনটি পাওয়া গিয়েছে। এঁদের মধ্যে তিন জন ফিরেছিলেন আমেরিকা থেকে। বাকিদের মধ্যে দু’জন ব্রিটেন, দু’জন তানজ়ানিয়া এবং এক জন ঘানা থেকে ফেরেন।
দিল্লিতে গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত বেড়েছে ২৯০ জন। দিল্লি সরকার রোজ রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত নৈশ কার্ফু ঘোষণা করেছে। আগামিকাল থেকেই তা কার্যকর হবে। ২৮ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী দশ দিনের জন্য ওই একই সময়সীমার নৈশ কার্ফুর নির্দেশ জারি করেছে কর্নাটক সরকারও। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে সুধাকর জানিয়েছেন, প্রকাশ্যে যাবতীয় অনুষ্ঠান, জমায়েত, ডিজে বাজানো— সব কিছু নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য হোটেল, ক্লাব বা রেস্তরাঁগুলি ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত ছাড় পেয়েছে। তবে মোট আসন সংখ্যার ৫০ শতাংশের বেশি ভর্তি করতে পারবে না তারা। বিয়ে-সহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, অফিসের অনুষ্ঠান, মিটিং বা জমায়েতে লোকসংখ্যা তিনশোর মধ্যে রাখতে হবে। মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানার মতো রাজ্য নৈশ কার্ফু জারি করেছিল আগেই। হরিয়ানায় টিকাকরণ না হলে বাইরে বেরোতেই বারণ করেছে সরকার। এ বার বিশেষ করে বর্ষবরণ ঘিরে সংক্রমণ রুখতে কড়া পথে হাঁটল দিল্লি ও কর্নাটক। পশ্চিমবঙ্গ অবশ্য বড়দিনের কার্নিভালে কোনও কড়াকড়ি করেছে বলে খবর নেই।