জাগছে এল নিনো, বর্ষা নিয়ে চিন্তা

মার্চের শেষ প্রহরে সকালের দিকে আংশিক মেঘে ঢাকা আকাশ। তাপমাত্রার রক্তচোখ নেই। কালবৈশাখীও বিলুপ্তপ্রায়। তবু এ সবই এখন চিন্তা বাড়াচ্ছে আবহবিদদের একাংশের।

Advertisement

দেবদূত ঘোষঠাকুর

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৭ ০৩:০৫
Share:

মার্চের শেষ প্রহরে সকালের দিকে আংশিক মেঘে ঢাকা আকাশ। তাপমাত্রার রক্তচোখ নেই। কালবৈশাখীও বিলুপ্তপ্রায়। তবু এ সবই এখন চিন্তা বাড়াচ্ছে আবহবিদদের একাংশের।

Advertisement

চিন্তা বর্ষা নিয়ে।

মৌসম ভবনের সরকারি পূর্বাভাস মিলতে আরও প্রায় মাসখানেক। কিন্তু বিশ্বের আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি নিয়ে কাজ করে এমন কিছু সংস্থা ইতিমধ্যেই স্বাভাবিক বর্ষা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

Advertisement

এমনই একটি সংস্থা তাদের পূর্বাভাসে জানিয়েছে, মার্চে সারা দেশে কিছুটা অস্বাভাবিক আবহাওয়া, ভারত মহাসাগরে বায়ু প্রবাহের অস্থির মতি এবং প্রশান্ত মহাসগরে এল নিনোর গা ঝাড়া দিয়ে ওঠা — প্রাকৃতিক এই তিন অবস্থা এ বার স্বাভাবিক বর্ষার অনুকূল নয়।

যে বেসরকারি সংস্থাটি সোমবার বর্ষার এই পূর্বাভাস দিয়েছে তাদের ব্যাখ্যা, প্রশান্ত মহাসাগরে এল নিনো এখন যে অবস্থায় রয়েছে, তাতে এ বার বর্ষায় ৫%-এর বেশি ঘাটতি হবে না। আবহবিদেরা ভেবেছিলেন, ২০১৬ সালের মতো এ বারেও এল নিনো ঘুমিয়ে থাকবে। এ বছরের গোড়ায় তেমন ইঙ্গিতও ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। প্রশান্ত মহাসাগরের তাপমাত্রা বাড়ছে। তা এল নিনো সক্রিয় হওয়ারই ইঙ্গিত— বলছেন আবহবিদেরা।

মৌসম ভবনের আবহবিদেরা অবশ্য বলছেন, যে যে বিষয়গুলির উপরে ভিত্তি করে তাঁরা বর্ষার পূর্বাভাস দেন, সে সব এখনও পরিষ্কার নয়। এল নিনো যে ২০১৪ এবং ২০১৫ সালের মতো এ বারের বর্ষাকেও প্রভাবিত করবে, তেমন কোনও স্পষ্ট ছবি মেলেনি এখনও। ২০১৪-য় সারা দেশে বর্ষার ঘাটতি ছিল ১১%। ২০১৫ সালে তা বেড়ে হয়েছিল ১৪%। সে বার দেশের অর্থনীতি বেকায়দায় পড়েছিল। তাই ২০১৬-র বর্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল কেন্দ্রীয় সরকার। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ২০১৬-র বর্ষা ডোবায়নি। একেবারে টায়েটুয়ে পাশ করে গিয়েছিল সে।

আরও পড়ুন: তিস্তা নিয়ে মধ্যস্থতা করুন প্রণব, চাইছেন হাসিনা

প্রত্যাশা মতো মৌসম ভবনের পূর্বাভাসের উপরেই নির্ভর করছে কেন্দ্র। ভবনের এক আবহবিজ্ঞানী জানাচ্ছেন, প্রশান্ত মহাসাগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভারত মহাসাগরের বায়ুপ্রবাহের গতিও দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর ছন্দকে নিয়ন্ত্রণ করে। ওই আবহবিজ্ঞানীর দাবি, ভারত মহাসাগরের বায়ুপ্রবাহ এই মুহূর্তে কিন্তু ভাল বর্ষার অনুকূল। এল নিনো কতটা সক্রিয় হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তাই এখনই বর্ষা নিয়ে কোনও পূর্বাভাস দিলে ভুল বার্তা যাবে।

ঘটনা যাই হোক, বর্ষার উপর নির্ভরশীল কৃষকেরা এই মার্চের আবহাওয়া দেখে খুব একটা আশায় নেই। বর্ধমানের এক সম্পন্ন কৃষকের কথায়, ‘‘তাপমাত্রা এই সময় যতটা বাড়া উচিত, তা হয়নি। কালবৈশাখীরও দেখা নেই। চৈত্র মাসের চেনা আবহাওয়া এই মুহূর্তে নেই। সেটা ভাবাচ্ছে।’’

মৌসম ভবন জানাচ্ছে, রাজস্থান, মধ্য ভারত, বিদর্ভ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাতের বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির উপরে পৌঁছতে শুরু করেছে। এটা ভাল লক্ষণ। কারণ, এই সব এলাকায় মার্চ, এপ্রিল, মে মাসে তাপমাত্রা তেমন না বাড়লে মৌসুমি বায়ুর অগ্রগতি ব্যাহত হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement