রাহুল গাঁধী।
কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেও নরেন্দ্র মোদী, আরএসএসের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখার হুঙ্কার ছুড়লেন রাহুল গাঁধী।
খোলা চিঠিতে রাহুল লিখলেন, ভোটে জয় হয়েছে মানেই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ মুছে যায় না। সেই সত্য গোপন করতে যতই অর্থ খরচ করে প্রচার করা হোক। রাহুলের কথায়, ‘‘দেশের প্রতিষ্ঠানগুলি কব্জা করার ব্যাপারে আরএসএসের লক্ষ্য সম্পূর্ণ হয়েছে। গণতন্ত্র দুর্বল হয়েছে। এ বারে ভারতের ভবিষ্যৎ রচনার বদলে আগামী ভোটগুলি হবে শুধুই নিয়মরক্ষা। এটাই আসল বিপদ।’’ এই ক্ষমতা দখল অভাবনীয় হিংসা ছড়াবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে রাহুল জানান, তাতে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কৃষক, বেকার যুবক, মহিলা, আদিবাসী, দলিত, সংখ্যালঘুরা।
এ সবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের থেকে কোনও ভাবেই পিছু না হঠার কথা জানিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘আমি কংগ্রেসের অনুগত সৈনিক, ভারতমাতার সন্তান। তাঁকে রক্ষা করার জন্য শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়াই করব।’’ লোকসভা ভোটের প্রচারের সময়ই রাহুল বারবার বিজেপি-আরএসএসের সঙ্গে কংগ্রেসের আদর্শের ফারাকটি মেলে ধরতেন। আজ আরও একবার বললেন, ‘‘আমার লড়াই কখনও রাজনৈতিক ক্ষমতা পাওয়ার জন্য ছিল না। বিজেপির প্রতি আমার কোনও ঘৃণা ও রাগ নেই। কিন্তু আমার শরীরের প্রতিটি জীবন্ত কোষ ভারত সম্পর্কে তাদের ভাবনাকে প্রতিহত করে। যেখানে ওরা ফারাক দেখে, আমি মিল দেখি। যেখানে ওরা ঘৃণা দেখে, আমি দেখি ভালবাসা। আর যেখানে ওরা ভয় পায়, আমি বুকে জড়িয়ে নিই।’’
রাহুলের মুখে এ সব শুনে বিজেপি নেতা রাজ্যবর্ধন সিংহ রাঠৌর বলেন, ‘‘রাহুলে গাঁধীর সিদ্ধান্তকে সম্মান করি। কিন্তু ইস্তফা দিতে গিয়ে যা বলছেন, তাতে সহমত নই। কংগ্রেসের ভাবনাকেই মানুষ ভোটে খারিজ করেছে। কারণ, ওই ভাবনার সঙ্গে পরিবারতন্ত্র, দুর্নীতি, অধিকার কেড়ে নেওয়া সমার্থক হয়ে উঠেছিল। তিনি তো যেতে যেতে নির্বাচন কমিশন, বিচারব্যবস্থা, সংবাদমাধ্যম— সকলকেই দোষ দিয়ে গেলেন!’’
আসলে রাহুল নিজের চিঠিতে লিখেছেন, এই সব প্রতিষ্ঠান নিরপেক্ষ ছিল না বলেই অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট হয়নি। আর্থিক সম্পদের সিংহভাগও একটি দলের কব্জায় ছিল। বিজেপির বক্তব্য, ‘‘রাহুল গাঁধী এখনও বুঝতে পারছেন না, কী কারণে তাঁর ও তাঁর দলের পরাজয় হয়েছে। এখনও তিনি সকলের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন। এমনকি নিজের দলের নেতাদের উপরেও। এমন কথা তো অরবিন্দ কেজরীবালও বলতেন— সবাই না কি মিলে আছে!’’