ধৃতের এই ছবিই প্রকাশ করেছে পুলিশ। টুইটার থেকে নেওয়া ছবি
‘এনকাউন্টারে মরতে চাই না, তাই আমি নিজেই আমার পথ বেছে নিলাম’— উত্তরপ্রদেশের হাপুর ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্তের এমনই সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছিল। সেখানেই মিলেছিল জামাকাপড়, পরিচয়পত্র। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হল না। ধর্ষণের ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পরে পুলিশের জালে পড়ল ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত দলপত সিংহ।হাপুর এলাকা থেকেই তাকে গ্রেফতারের সময় দলপত এক পুলিশ আধিকারিকের আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেয় বলে বলে পুলিশের দাবি। পাল্টা গুলিতে আহত হয়েছে দলপত, জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতারের পর পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত ভুল পথে চালিত করতেই সুইসাইড নোট লিখেছিল অভিযুক্ত দলপত।
নির্যাতিতা ওই শিশুর বাড়ি আমরোহার হাপুর গ্রামে। অভিযুক্ত দলপত সিংহ লাগোয়া গ্রাম মেহমুদপুরের বাসিন্দা। গত ৬ অগস্ট হাপুর গড়ের কাছে খেলছিল ওই শিশু। অভিযোগ, সেই সময় দলপত তাকে জোর করে কাছের একটি জঙ্গলে তুলে নিয়ে যায়। সেখানে ওই শিশুকে ধর্ষণ করে ফেলে রেখে যায় বলেও অভিযোগ নির্যাতিতার পরিবারের। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা ওই জঙ্গলের ভিতর থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে ওই শিশু মেরঠের একটি হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। নির্যাতনের পর দীর্ঘক্ষণ জঙ্গলে পড়ে থাকায় তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এই ঘটনার পর থেকেই দলপতের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। তার সন্ধান দিতে পারলে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা করা হয় পুলিশের তরফে। পাশাপাশি স্কেচ তৈরি করে ছড়িয়ে দেওয়া এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়। তার মধ্যেই শুক্রবার মেহমুদপুর গ্রামের কাছেই ওই সুইসাইড নোট-সহ তার কয়েকটি জামাকাপড় এবং যে সংস্থায় দলপত কাজ করত, তার পরিচয়পত্র উদ্ধার হয়। সুইসাইড নোটে লেখা হয়েছে, ‘‘আমি জানি আমাকে এনকাউন্টারে হত্যা করা হবে। কিন্তু আমি সে ভাবে মরতে চাই না। জীবন শেষ করতে আমি নিজেই নিজের পথ বেছে নেব। দয়া করে আমার সন্তানদের হেনস্থা করবেন না।’’
আরও পড়ুন: বিচারপতি, বিচারব্যবস্থা নিয়ে টুইট, আদালত অবমাননায় দোষী সাব্যস্ত প্রশান্ত ভূষণ
কিন্তু মৃতদেহ না মেলা পর্যন্ত পুলিশ এই সুইসাইড নোটে বিশ্বাস করতে রাজি নয়। তদন্তকারীদের দাবি, তদন্ত ভুল পথে চালিত করতে এই রকম করে থাকতে পারে অভিযুক্ত। আমরোহার এক পদস্থ পুলিশ কর্তা বলেছেন, ‘‘যতক্ষণ না দলপতের দেহ বা তার সন্ধান না মিলছে, এই সুইসাইড নোট আমরা বিশ্বাস করছি না। ওর হাতের লেখার সঙ্গে সুইসাইড নোটের লেখা মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করছি আমরা।’’ হাপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সর্বেশ মিশ্র বলেছেন, ‘‘অভিযুক্তের মেহমুদপুরের বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে তার জামা-পাজামা ও পরিচয়পত্রের সঙ্গে একটি সুইসাইড নোট মিলেছে।’’
আরও পড়ুন: আরও কমল সংক্রমণ হার, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ১০০৭ জনের
তবে ওই ঘটনার পর সোমবার মেহমুদপুর গ্রামের কাছেই দলপতকে একটি দেশি মদের বোতল হাতে তাকে দেখতে পেয়েছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু পুলিশ পৌঁছনোর আগেই সে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে তার খোঁজে একাধিক দল গঠন করে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে হাপুরের পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।