সুবিচার: রায় শোনার পরে সুপ্রিম কোর্ট থেকে বেরিয়ে আসছেন নির্ভয়ার মা আশা দেবী। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।
হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই চালানো মেয়েটার মনের জোর দেখে চমকে উঠেছিলেন দিল্লি পুলিশের দুঁদে অফিসার ছায়া শর্মা। বছর তেইশের মেয়েটার একটাই আর্জি ছিল, ‘‘যারা আমার এই দশা করেছে, তাদের ছাড়বেন না!’’
ছাড়েননি ছায়া শর্মা ও তাঁর সঙ্গী অফিসারেরা। তাঁর প্রমাণ ফের মিলল শুক্রবার দুপুরে। নির্ভয়া-মামলায় চার অপরাধীর ফাঁসির সাজা বহাল রাখতে গিয়ে সর্বোচ্চ আদালত বারেবারেই প্রশংসা করেছে তদন্তকারীদের। আর সেটাই মুখে হাসি ফুটিয়েছে ছায়া ও তাঁর সঙ্গীদের। ছায়া নিজে এখন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে কর্মরতা। এ দিনের রায়ের পরে এজলাসের বাইরে দাঁড়িয়ে সেই সময়কার তদন্তের অভিজ্ঞতা শোনাতে গিয়ে বারেবারেই নির্ভয়ার প্রশংসা করছিলেন। ওই নৃশংস অত্যাচারের পরেও মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েননি নির্ভয়া। ছায়ার কথায়, ‘‘হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শুয়েই গোটা ঘটনা বলেছিল মেয়েটা। কিচ্ছু বাদ দেয়নি। ও অতটা নিখুঁত ভাবে ঘটনাটা না বললে আমরা তদন্ত শুরুই করতে পারতাম না।’’
আরও পড়ুন:নির্ভয়া-কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে ফাঁসিই বহাল চার ধর্ষকের
তদন্তের শুরুটা যে যথেষ্ট কঠিন ছিল, তা স্বীকার করেছেন তদন্তকারী দলের প্রত্যেকেই। অপরাধীরা চেনা কেউ নয়। সূত্র বলতে বাসের লাল সিট আর হলুদ পর্দা। তার ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু। সাফল্য পেতে অবশ্য দেরি হয়নি। তার পরে দ্রুত চার্জশিট এবং মামলা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এ দিনের রায়ের পরে দিল্লি পুলিশের একাধিক অফিসারের আক্ষেপ, ‘‘নির্ভয়ার উপরে সবচেয়ে বেশি অত্যাচার চালিয়েছিল যে ছেলেটা, বয়সের ফাঁক গলে সে-ই ছাড় পেয়ে গেল!’’ পুলিশ সূত্রের খবর, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহায়তায় দক্ষিণ ভারতে একটি বড় রেস্তোরাঁয় এখন চাকরি করে বছর তেইশের সেই ছেলেটি। ভালই আছে সে, জানতে পেরেছেন পুলিশ-কর্তারা।