Dinosaur

Dinosaur: পাথরে রয়ে গিয়েছে ডাইনোসরের পদচিহ্ন

সম্প্রতি জোধপুরের জয় নারায়ণ ব্যাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক বীরেন্দ্র সিংহ পরিহার ও তাঁর দল জয়সলমেরের থাইয়াট গ্রাম থেকে আবিষ্কার করেছেন তিনটি প্রজাতির ডাইনোসরের পায়ের ছাপ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জয়সলমের শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:২৬
Share:

প্রতীকী ছবি

মরু এলাকা জয়সলমের থেকে আগেও মিলেছিল ডাইনোসরের পায়ের ছাপ। এ বার ফের ওই এলাকা থেকেই ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পেলেন গবেষকেরা। এ বারে প্রাপ্ত পায়ের ছাপের মালিকদের বয়স প্রায় ২০ কোটি বছর বলেই জানিয়েছেন গবেষকেরা। শুধু তাই নয়, তবে এ বারে প্রাপ্ত পায়ের ছাপ দেখে অনুমান, এগুলি আগে পাওয়া ডাইনোসরদের একই পরিবারভুক্ত। তবে এদের আকার সেগুলির থেকে বড় ছিল।

Advertisement

সম্প্রতি জোধপুরের জয় নারায়ণ ব্যাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক বীরেন্দ্র সিংহ পরিহার ও তাঁর দল জয়সলমেরের থাইয়াট গ্রাম থেকে আবিষ্কার করেছেন তিনটি প্রজাতির ডাইনোসরের পায়ের ছাপ। ইউব্রনটেস জাইগানটিয়াস, ইউব্রনটেস গ্লেনরোসেনসিস ও গ্র্যালেটার টেনুইস নামের তিনটি প্রজাতির মধ্যে প্রথম দু’টির পায়ের ছাপ ৩৫ সেন্টিমিটার। গ্র্যালেটারের পায়ের ছাপ ৫.৫ সেন্টিমিটার। ২০১৪ সালেও ওই অঞ্চল থেকে পাওয়া গিয়েছিল গ্র্যালেটার ও জাইগানটিয়াসের পায়ের ছাপ। প্রথমটি ছিল ৫ সেন্টিমিটার, দ্বিতীয়টি ৩০ সেন্টিমিটার। ২০১৬ সালে মেলে গ্লেনরোসেনসিসের ছোট পায়ের ছাপ।

এ বিষয়ে কলকাতার ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের (আইএসআই) ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ধূর্জটিপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেন, “ওই অঞ্চল থেকে এমন আবিষ্কার আগেও হয়েছে। ইউব্রনটেস এবং গ্র্যালেটার ট্রায়াসিক পর্বের বেশ পরিচিত ডাইনোসর। রাজস্থানের ওই অঞ্চলে তাদের অস্তিত্বের প্রমাণও রয়েছে। তবে এই নতুন আবিষ্কারও অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, এমন আরও পাওয়া যেতে পারে।”

Advertisement

গবেষকেরা জানিয়েছেন, ভেজা মাটিতে ডাইনোসরদের পায়ের ছাপ পড়েছিল। সেই নরম পলিমাটি পাললিক শিলায় পরিণত হওয়ায় পায়ের ছাপ তাতে রয়ে গিয়েছে। এই ধরণের জীবাশ্মকে বলা হয় ‘ট্রেস ফসিল’ (যেখানে প্রাণীটির শরীরের কোনও অংশ সংরক্ষিত নেই)। এই পায়ের ছাপ থেকেই ভূতত্ত্ববিদেরা পায়ের ছাপের মালিকের আকার আঁচ করতে পারেন।

মরু রাজ্যে নরম পলি এল কোথা থেকে তার ব্যাখ্যা হিসেবে ভূতত্ত্ববিদেরা জানান, পৃথিবীর সৃষ্টির পর থেকে এখনও পর্যন্ত বারবার ঘটে চলেছে ‘ট্রান্সগ্রেশন-রিগ্রেশন’ নামে এক চক্রাকার পদ্ধতি। এতে এক বার সমুদ্র এগিয়ে এসেছে, এক বার পিছিয়ে গিয়েছে। আজ থেকে প্রায় ২৩ কোটি বছর আগে, ভূতত্ত্বের ভাষায় ‘ট্রায়াসিক পিরিয়ড’-এ ডাইনোসরেরা পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়। তখন ট্রান্সগ্রেশন পর্ব চলছিল। ভারতীয় পাতের (প্লেট) চারপাশে ছিল টেথিস সমুদ্র। ভূস্তরীয় (টেকটনিক) পাতের সংঘর্ষে যার গর্ভের মাটি এখন হিমালয় পর্বত হয়ে উঠেছে।

তবে গবেষকেরা জানিয়েছেন, পাথরের ভূ-রাসায়নিক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সেই যুগেও মরু রাজ্যের আবহাওয়া ছিল বেশ উষ্ণ। বৃষ্টিপাতও হত কম।

ভারতে অবশ্য ডাইনোসরের জীবাশ্ম আবিষ্কার নতুন নয়। এমনকি, খোদ রবি ঠাকুরের নামেও ডাইনোসরের নামকরণ হয়েছে। ১৯৬১ সালে দক্ষিণ ভারত থেকে আবিষ্কৃত এই ডাইনোসরের জীবাশ্ম পাওয়া যায়। রবীন্দ্রনাথের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ডাইনোসরের নাম রাখা হয় বড়পাসউরাস টেগোরেই। আইএসআই-এর মিউজ়িয়ামে গেলে সেটি রয়েছে। ভারতে প্রথম ডাইনোসরের জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছিল ১৮২৮ সালে, জব্বলপুরে। তার পর থেকে ওই অঞ্চলে পাওয়া গিয়েছে ডাইনোসরদের হাড়, পায়ের ছাপ ও ডিম। ২০০১ থেকে শুরু করে কয়েক বার মেঘালয়ের পাহাড়ে পাওয়া গিয়েছে সরোপড ডাইনোসরদের জীবাশ্ম। দক্ষিণ ভারতের কিছু এলাকাতে এমন জীবাশ্ম পাওয়া যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement