Bangladesh

Sheikh Hasina: হাসিনা খালি হাতে ফিরে যান, তা চায় না ঢাকা

বৃহস্পতিবার দু’দেশের মধ্যে যে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে তিস্তা চুক্তির বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভাবে রেখেছে বাংলাদেশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২২ ০৭:০৫
Share:

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে কূটনৈতিক আদান প্রদানে ভারসাম্যের বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাইছে ঢাকা। অন্যান্য বারের তুলনায় এ বারের হাসিনার সফর বাংলাদেশের ঘরোয়া রাজনৈতিক কারণে বাড়তি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ঢাকা সূত্রের বক্তব্য, বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণে তৈরি হওয়া ভারত-বিরোধী মানসিকতাকে প্রশমিত করে আওয়ামী লীগ সরকারকে এগোতে হয়। সেই অংশ যাতে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সরব না-হতে পারে সে কারণে ভারত থেকে ‘খালি হাতে’ ফিরতে চান না বাংলাদেশের নেত্রী। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকের পরে বৃহস্পতিবার দু’দেশের মধ্যে যে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে তিস্তা চুক্তির বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভাবে রেখেছে বাংলাদেশ। যদিও ভারতের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে আলাদা করে তিস্তা চুক্তির নামোল্লেখ করা হয়নি।

Advertisement

বাংলাদেশ জানে যে হাসিনার এই সফরে তিস্তা চুক্তি সম্পাদনা হবে না। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ঐকান্তিক, সেই বার্তা জোরালো ভাবে নিজের দেশবাসীর কাছে তুলে ধরা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে। আর সে কারণেই হাসিনা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক হলে অবশ্যই ঢাকার দিক থেকে প্রাধান্য পাবে তিস্তা চুক্তি।

আসন্ন সফরে ঢাকা এই বার্তাও সুস্পষ্ট ভাবে বিভিন্ন স্তরে সাউথ ব্লককে দিতে চাইছে যে প্রতিবেশী বলয়ে স্বস্তিতে থাকতে হলে বাংলাদেশকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ ভারতের ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে যে চিন, বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্কও অত্যন্ত মসৃণ। কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, ভূকৌশলগত অবস্থানের কারণে পরস্পর যুযুধান ভারত এবং চিন— এই দুই দেশের কাছেই বাংলাদেশের আলাদা আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। চিনের উন্নয়ন প্রকল্পের অন্যতম অংশীদার ঢাকা। তার চেয়েও বড় কথা, বাণিজ্য এবং সংযোগের প্রশ্নে ভারত এবং চিন— এই দুই দেশের জন্যই বাংলাদেশকে প্রয়োজন। দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ক্ষমতার লড়াইয়ে বলীয়ান হতে হলে, বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্ক বাড়ানোর সম্ভাবনা নয়াদিল্লি ও বেজিংকে আরও বেশি করে খতিয়ে দেখতে হবে।

Advertisement

ঢাকার এক সূত্র জানাচ্ছে, “ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ এবং ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির প্রশ্নে বাংলাদেশের গুরুত্ব ক্রমশ বাড়ছে। ভূকৌশলগত অবস্থানের কারণে দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মধ্যে স্বাভাবিক সংযোগ সেতু বাংলাদেশই। ফলে সার্ক এবং আসিয়ান-এর মধ্যে কোনও আঞ্চলিক সমন্বয় বা বিমস্টেকভুক্ত রাষ্ট্রগুলির যৌথ উদ্যোগ বাংলাদেশকে বাদ দিয়ে অসম্ভব।”

আসন্ন শীর্ষ বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হবে, ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে প্রত্যন্ত উত্তর পূর্বের যোগাযোগ এবং বাণিজ্য আরও বাড়ানোর ক্ষমতা ধরে ঢাকা। কিন্তু যে কোনও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নির্ভর করে কূটনৈতিক আদানপ্রদানের উপর। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্রীয় সরকার তিস্তা চুক্তি রূপায়ণ দ্রুত করুক, এ কথা গত কাল রাতে প্রকাশিত বাংলাদেশের বিবৃতিতে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। দু’দেশের শীর্ষ বৈঠকের পর যে যৌথ বিবৃতি প্রকাশিত হবে, তাতেও তিস্তার প্রসঙ্গ জোরাল ভাবে রাখতে চাইবে বাংলাদেশ। পাশাপাশি, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মায়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য আঞ্চলিক শক্তি হিসাবে নয়াদিল্লি বাড়তি উদ্যোগ নিক, আগামী দিনে তা-ই চাইবে শেখ হাসিনা সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement