জগন্নাথদেবকে নিয়ে পুরীর স্থানীয় ভক্তদের আবেগ এবং মন্দিরে শৃঙ্খলা রক্ষা— দু’দিকে ভারসাম্য রেখে ‘দর্শন’-এর বন্দোবস্তের লাগাম নিজের হাতে নিতে উদ্যোগী হলেন মন্দির প্রশাসন কর্তৃপক্ষ। আগামী জানুয়ারি থেকে বিগ্রহের গর্ভগৃহের কাছে ‘ভিতরকাঠ’ অবধি গিয়ে দর্শনের জন্য টিকিট চালু করার কথা ঘোষণা করলেন মন্দিরের মুখ্য প্রশাসক প্রদীপকুমার মহাপাত্র।
কয়েক মাস আগেই জগন্নাথ মন্দিরের সেবায়েত তথা পান্ডাদের ‘দৌরাত্ম্য’ তোলাবাজির নামান্তর বলে সমালোচনায় সরব হয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। পান্ডারাজ বন্ধ করতে তখন থেকেই ব্যবস্থা নিতে চাইছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। এর আগে মন্দিরে ঢোকার, বেরনোর পথে আনাগোনা বেঁধে দিতে দর্শনার্থীদের সারিবদ্ধ আসা-যাওয়া চালু করতে চেয়েছিলেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। তবে তাতে মন্দিরের স্বাভাবিক ছন্দ টাল খাচ্ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। পুরীর সাধারণ ভক্তেরা মন্দিরে ঢুকতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। এই নিয়ে নানা বিক্ষোভ দানা বাঁধে। তখন সেই ব্যবস্থা বন্ধ করে নতুন কিছু ভাবা শুরু হয়।
নয়া ব্যবস্থা প্রসঙ্গে মুখ্য প্রশাসকের ঘোষণা, ‘‘দিনে চার বার টিকিট কেটে কাছ থেকে দর্শন সারা যাবে। বাকি সময়ে মন্দিরের ভিতরে ভক্তদের নিজের মতো ঘোরাঘুরিতে বাধা নেই।’’ মন্দিরের সরকারি কমিটির অন্যতম সদস্য তথা প্রবীণ দয়িতাপতি বড়গ্রাহীদের একজন, রামচন্দ্র দয়িতাপতি গর্ভগৃহে দর্শনের জন্য টিকিটের ব্যবস্থায় অন্যায় কিছু দেখছেন না।
আরও পড়ুন: দাদুদের শিকড় ছেঁড়ার ‘গল্প’ লিখছে খুদেরা
আরও পড়ুন: হোম-কাণ্ডে বিহার সরকারকে ফের ধমক
রামচন্দ্র দয়িতাপতির মত, ‘‘কিছু সেবায়েত পুণ্যলোভ দেখিয়ে নানা ভাবে ভক্তদের উপরে জোরজুলুম করেন। সেটা বন্ধ হোক। কিন্তু যজমান-পান্ডার পারস্পরিক সম্পর্কের পরম্পরা নষ্ট করার মানে হয় না। টিকিট কেটে দর্শনের বন্দোবস্তে মন্দিরের চিরাচরিত পরম্পরা ব্যাহত হবে না।’’ ভক্তদের দক্ষিণা তথা প্রভুকে নিবেদিত সোনার গয়নার সদ্ব্যবহার নিয়েও ভাবা হচ্ছে। ভক্তদের দান করা সোনা কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পে ব্যাঙ্কে রাখলে আড়াই শতাংশ সুদ মিলবে বলে মুখ্য প্রশাসক জানিয়েছেন।