বিধানভবনে ঢুকছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। রবিবার মুম্বইয়ে। ছবি: পিটিআই।
রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু হয় না, ‘ক্ষমতায় ফিরবই’ বলাটা তাই অহঙ্কারের আষ্ফালন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির দেবেন্দ্র ফডণবীস বিরোধী দলনেতা নির্বাচিত হওয়ার পরে এ ভাবেই তাঁকে বিঁধলেন শিবসেনার নতুন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। নিজের বক্তৃতায় ফডণবীস পাল্টা বলেন, ‘‘আবার বলছি, জোর দিয়ে বলছি— ফিরে আসবই! কটা দিন বেশি সময় লাগবে মাত্র। কিন্তু শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোটের কিম্ভূত সরকার বেশি দিন চলতে পারে না।’’ তাঁর দাবি, সরকার গঠনের প্রশ্নে জনাদেশকে হারিয়ে দিয়েছে পাটিগণিত।
নিজেদের প্রার্থী কিষাণ কাঠোরের নাম বিজেপি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরে এ দিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় স্পিকার নির্বাচিত হন শাসক জোটের প্রার্থী কংগ্রেস বিধায়ক নানা পাটোলে। প্রটেম স্পিকার দিলীপ ওয়ালসে পাটিল তাঁর জয়ের কথা ঘোষণা করা মাত্র ৫৭ বছরের পাটোলেকে স্পিকারের চেয়ার পর্যন্ত এগিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী ঠাকরে এবং জোটের বিধায়কেরা। ঠাকরে তাঁকে কৃষক নেতা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘‘এক কৃষকের সন্তান এই পদে বসায় আমি খুশি।’’ এর আগে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে ২০১৪-য় পদ্মের টিকিটে বিধায়ক হয়েছিলেন নানা পাটোলে। তবে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার এবং মহারাষ্ট্রের ফাডনবীস সরকার কৃষক-বিরোধী নীতি নিয়ে চলছে, এই অভিযোগ করে ২০১৭-য় তিনি ফের কংগ্রেসে ফিরে এসেছিলেন। কৃষক আত্মহত্যার জন্য পরিচিত বিদর্ভের সাকোলি থেকে টানা চার বার বিধায়ক হয়েছেন নানা। পিছিয়ে থাকা বিদর্ভ থেকে দু’দশকে এই প্রথম কেউ বিধানসভার স্পিকার হলেন।
আরও পড়ুন: মোদী-আবে বৈঠকের প্রস্তুতির ব্যস্ততা তুঙ্গে
বিধানসভায় এ দিন নজর কেড়েছে মুখ্যমন্ত্রী ঠাকরে এবং বিরোধী নেতা ফডণবীসের চাপানউতর। অহঙ্কারের জন্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে তুলোধোনা করেও ঠাকরে বলেন, ‘‘দেবেন্দ্র আমার বন্ধু। আমি তাঁর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। বিরোধী নেতা নয়, আমি চাইব তিনি দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে কাজ করবেন।’’
২৫ বছর হাতে হাত মিলিয়ে চলার পরে বিজেপি ও শিবসেনাকে বিধানসভার দুই প্রান্তে বসতে হবে, এমন আশা তিনি কখনও করেননি বলে দাবি করেন ঠাকরে। এ জন্য তিনি ফডণবীস ও তার দল বিজেপিকে দায়ী করে বলেন, ‘‘আপনারা আমাদের সঙ্গে ভাল আচরণ করলে বিজেপি-শিবসেনা জোট এ ভাবে ভাঙত না।’’
বিজেপি শাসক জোটকে ‘স্বার্থের জোট’ বলে আক্রমণ হানলেও মুখ্যমন্ত্রী ঠাকরে এ দিন দাবি করেন, কৃষকদের স্বার্থেই জোট করেছে শিবসেনা, এনসিপি এবং কংগ্রেস। শুধু ঋণ মকুব নয়, মহারাষ্ট্রের কৃষকদের তার চেয়ে বেশি কিছু প্রয়োজন। সে বিষয়ে তাঁর সরকার শীঘ্রই পদক্ষেপ করবে বলে জানান ঠাকরে। ঠাকরে বলেন, ‘‘কৃষকদের স্বার্থে কাজ করেননি বলেই দেবেন্দ্রকে আজ বিরোধী আসনে বসতে হয়েছে। এটা তাঁর দলের বোঝা উচিত।’’