Army Special Train in Madhya Pradesh

কাশ্মীর থেকে কর্নাটকগামী ‘আর্মি স্পেশাল’ ট্রেন ওড়ানোর চেষ্টা? মধ্যপ্রদেশে রেললাইনে উদ্ধার ডিটোনেটর

মধ্যপ্রদেশের নেপানগরের কাছে রেললাইনে বিস্ফোরণ হয়। সেই বিস্ফোরণের আওয়াজ পেয়েই চালক ট্রেনটিকে থামিয়ে দেন। দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে রেল সুরক্ষা বাহিনী এবং রেলের শীর্ষ কর্তারা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:৪৯
Share:

এই স্টেশনের কাছেই রেললাইন থেকে উদ্ধার হয়েছে ডিটোনেটর। ছবি: সংগৃহীত।

জম্মু-কাশ্মীর থেকে কর্নাটকে যাচ্ছিল ‘আর্মি স্পেশাল’ ট্রেন। তাতে সেনা জওয়ানরা ছিলেন। মধ্যপ্রদেশের নেপানগরের কাছে রেললাইনে বিস্ফোরণ হয়। সেই বিস্ফোরণের আওয়াজ পেয়েই চালক ট্রেনটিকে থামিয়ে দেন। দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে রেল সুরক্ষা বাহিনী এবং রেলের শীর্ষ কর্তারা। তল্লাশির সময় রেললাইন থেকে বেশ কিছু ডিটোনেটর উদ্ধার হয়। একটি ডিটোনেটর ট্রেনের সংস্পর্শে আসাতেই সেই বিস্ফোরণ হয়েছিল রেল প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যেপ্রদেশের সাগফাটা রেলস্টেশনের কাছে।

Advertisement

বিস্ফোরণের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সন্ত্রাসদমন শাখা এবং জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার শীর্ষ আধিকারিকরা। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, রেললাইনে রাখা বিস্ফোরক আরডিএক্স ছিল না। সেগুলি ছিল ফগ ডিটোনেটর। রেললাইন থেকে ১০টি ডিটোনেটর উদ্ধার করে তদন্তকারী সংস্থাগুলি। ফগ ডিটোনেটর সাধারণত কুয়াশার জন্য ব্যবহার করা হয়। ট্রেনচালককে সতর্ক করতে রেলালাইনের কাছে এই ডিটোনেটর বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

সূত্রের খবর, সাধারণত এক জায়গায় একটি ডিটোনেটরই ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বুধবার রেললাইন থেকে যে ডিটোনেটরগুলি উদ্ধার হয়েছে সেগুলি এক জায়গাতেই জড়ো করে রাখা ছিল। আর এখানেই সন্দেহ বাড়ছে তদন্তকারীদের। মেয়াদ ফুরানো এই ডিটোনেটরগুলি দুষ্কৃতীরা রেললাইনে রেখেছিল। কিন্তু তাদের হাতে এই ডিটোনেটর কোথা থেকে এল? তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

Advertisement

গত ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুর ১টা ৪৮ মিনিটে মধ্যপ্রদেশের সাগফাটা স্টেশনের কাছে ‘আর্মি স্পেশাল’ ট্রেন পৌঁছতেই রেললাইনে থাকা একটি ডিটোনেটর বিস্ফোরণ হয়। পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ, ডেপুটি পুলিশ সুপার, নেপানগর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক এবং রেলের শীর্ষ কর্তারা শনিবার বিকেলে ঘটনাস্থলে যান। ওই দিনই তদন্তে আসে এনআইএ, এটিএস এবং অন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের সন্দেহ, ট্রেনটিকে লাইনচ্যুত করানোর ছক কষা হয়েছিল। এর সঙ্গে জঙ্গিযোগ আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

রবিবারই উত্তরপ্রদেশের কানপুরে রেললাইন থেকে গ্যাস সিলিন্ডার উদ্ধার হয়। চালক দেখতে পেয়েই ট্রেন থামিয়ে দেন। বড়সড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় ট্রেনটি। শুক্রবারেও গুজরাতে রেললাইনের ফিশপ্লেট খুলে রাখা হয়েছিল। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একের পর এক এই ধরনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় উদ্বেগ বাড়ছে। সম্প্রতি এই ধরনের ঘটনা নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনে রেল। যে ঘটনা দিনের পর দিন রেলের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে, তা হল ট্রেনকে লাইনচ্যুত করানোর প্রবণতা। দেশ জুড়ে এই প্রবণতা বাড়ছে বলেও ওই রিপোর্টে দাবি করেছে রেল। কখনও রেললাইনের উপর গাছের গুঁড়ি, কখনও সিমেন্টের ব্লক, কখনও পাথর, গ্যাস সিলিন্ডার, সাইকেল ফেলে রাখা হচ্ছে। যার জেরে লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা বাড়ছে বলে দাবি রেলের।

রেলের রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত অগস্ট থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ১৮ বার ট্রেন লাইনচ্যুত করানোর প্রচেষ্টা হয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য যে, এই ১৮ বারের মধ্যে শুধু অগস্টেই ১৫ বার ট্রেন লাইনচ্যুত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তিন বার চেষ্টা করা হয়েছে সেপ্টেম্বরের শুরুতেই। যার মধ্যে রবিবার কানপুরে কালিন্দি এক্সপ্রেসকে লাইনচ্যুত করার প্রচেষ্টা এবং ওই দিনই রাজস্থানের অজমেরে একটি মালগাড়িকে একই ভাবে লাইনচ্যুত করানো প্রচেষ্টা করানো হয়েছিল।

রেলের এই রিপোর্ট অনুযায়ী, অগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে যে সব রাজ্যে এই প্রবণতা লক্ষ করা গিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা এবং তেলঙ্গানা। তবে উত্তরপ্রদেশে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি লক্ষ করা গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement