বন্দি নেতাদের নিয়ে এমএলএ হস্টেলের পথে। শ্রীনগরে। ছবি: পিটিআই।
ঠান্ডার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় গত কাল শ্রীনগরের চশমে শাহির অতিথিশালা থেকে সরানো হয়েছিল মেহবুবা মুফতিকে। আজ ডাল লেকের তীরের সেন্টর হোটেলে বন্দি ৩৪ জন কাশ্মীরি নেতাকে সরানো হল শ্রীনগরের এমএলএ হস্টেলে। সরানোর সময়ে সাজ্জাদ লোন, ওয়াহিদ প্যারা ও শাহ ফয়সলকে মারধর করা হয়েছে বলে সাজ্জাদ লোনের দলের তরফে ও মেহবুবা মুফতির টুইটার হ্যান্ডল থেকে দাবি করা হয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা খারিজের আগেই বন্দি করা হয় ওমর আবদুল্লা, ফারুক আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতি-সহ প্রায় সব প্রথম সারির কাশ্মীরি নেতা-নেত্রীকে। ফারুককে শ্রীনগরে তাঁর বাড়িতেই রাখা হয়েছে। বাকি নেতাদের রাখা হয়েছিল বিভিন্ন সরকারি হোটেল-অতিথিশালা-প্রটোকল ভবনে। সেগুলিকে সাব-জেলের মর্যাদা দেয় প্রশাসন।
শীতে ডাল লেকের তীর কাশ্মীরের শীতলতম স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম। ফলে কিছু দিন ধরেই সেন্টর হোটেলে বন্দি নেতাদের সরানোর কথা ভাবছিল প্রশাসন। কিন্তু কয়েক দিনের প্রবল তুষারপাতে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: রামমন্দির নিয়ে চুপ থেকে জল মাপছে যদুবংশ
কাল চশমে শাহির অতিথিশালা থেকে মেহবুবাকে সরানো হয় মৌলানা আজাদ রোডের সরকারি বাড়িতে। এক সময়ে ওই বাড়িতেই থাকতেন মেহবুবার বাবা প্রয়াত মুফতি মহম্মদ সইদ। মেহবুবার মেয়ে ইলতিজা কাল বলেন, ‘‘মায়ের স্বাস্থ্য নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে উদ্বিগ্ন ছিলাম। যে কটেজে মাকে রাখা হয়েছিল তার জানলা ভাঙা ছিল। উপযুক্ত হিটারও নেই। কিন্তু আমার কথা কেউ শুনছিলেন না।’’
আজ সেন্টর হোটেল থেকে ৩৪ জন বন্দিকে সরানো হয়েছে মৌলানা আজাদ রোডেরই এমএলএ হস্টেলে। সরকারি সূত্রের খবর, বন্দি নেতা ও তাঁদের পাহারায় নিযুক্ত রক্ষীরা ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন। সে জন্যই দ্রুত পদক্ষেপ। এর পরেই মেহবুবার টুইটার হ্যান্ডল থেকে অভিযোগ করা হয়, এমএলএ হস্টেলে নিয়ে যাওয়ার সময়ে সাজ্জাদ লোন, ওয়াহিদ প্যারা ও শাহ ফয়সলকে মারধর করা হয়েছে। মেহবুবার টুইটার হ্যান্ডলটি এখন ব্যবহার করেন ইলতিজা।
তিনি লেখেন, ‘‘পিপলস কনফারেন্স নেতা সাজ্জাদকে এক সময়ে ভাই বলতেন নরেন্দ্র মোদী। কাশ্মীরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ওয়াহিদের ভূমিকার প্রশংসা করেছিলেন রাজনাথ সিংহ। শাহ ফয়সলকে কাশ্মীরের রোল মডেল বলা হয়েছিল। তাঁদেরই এমন অবস্থা হলে অন্যদের কী হাল হতে পারে বুঝে দেখুন।’’ সাজ্জাদের দলের তরফেও দাবি, দেহ তল্লাশির নামে সাজ্জাদকে মারধর করা হয়েছে। এই দাবি খারিজ করেছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। তবে সরকারি সূত্রে খবর, সাজ্জাদ দেহ তল্লাশি ছাড়াই হস্টেলে ঢুকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এমএলএ হস্টেলকেও এখন সাব-জেলের তকমা দেওয়া হয়েছে। তল্লাশি ছাড়া সেখানে ঢুকতে দেওয়া সম্ভব নয়। এ নিয়ে দু’পক্ষে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।