যোগী আদিত্যনাথ ছাড়াও আজ প্রমোদ সাবন্ত ও বীরেন সিংহকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল দিল্লিতে। দুপুরে গোয়া ও মণিপুরের দুই কার্যনির্বাহী মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী।
ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, আগেই ঠিক ছিল। আজ পঞ্জাবে যখন ভগবন্ত মান মুখ্যমন্ত্রিত্বের শপথ নিচ্ছেন, তখন গোয়ায় প্রমোদ সাবন্ত এবং মণিপুরে এন বীরেন সিংহের নামে কার্যত সিলমোহর দিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। বাকি রইল শুধু উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন। যদিও এখনও কোনও রাজ্যেরই মুখ্যমন্ত্রীর নাম আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেনি বিজেপি।
যোগী আদিত্যনাথ ছাড়াও আজ প্রমোদ সাবন্ত ও বীরেন সিংহকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল দিল্লিতে। দুপুরে গোয়া ও মণিপুরের দুই কার্যনির্বাহী মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। সূত্রের মতে, সেই বৈঠকেই তাঁদের দ্বিতীয় বার মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। সূত্রের মতে, গত কাল রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাড়িতে বৈঠকে বসেছিলেন অমিত শাহ, জে পি নড্ডারা। সেই বৈঠকেই মণিপুর ও গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীদের নাম স্থির হয়।
প্রমোদ ও বীরেনের নেতৃত্বে দল যথাক্রমে গোয়া ও মণিপুরে জিততে সক্ষম হলেও নিজ নিজ রাজ্যের বিধায়কদলের মধ্যে ওই দুই নেতাকে নিয়ে প্রশ্ন থাকায় সেই আপত্তির বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেয় দল। সূত্রের মতে, মণিপুরে বীরেনের নেতৃত্বে জয় এলেও তাঁর সঙ্গে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার সম্পর্কের সমীকরণ আদৌ উষ্ণ নয়। বিজেপি সূত্রের মতে, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী পদে বীরেনের পরিবর্তে বিশ্বজিৎ সিংহের জন্য দরবার করে অমিত শাহের দ্বারস্থ হন অসমের মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হিমন্তবিশ্ব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ। ফলে বীরেনের দ্বিতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়া নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন দেখা যায়। তবে সঙ্ঘ পরিবার বীরেনের সমর্থনে এগিয়ে আসে বলে সূত্রের দাবি।
অন্য দিকে নিজের কেন্দ্র থেকে মাত্র হাজারখানেক ভোটে জেতা প্রমোদের কার্যকারিতা নিয়ে গোয়াতেই প্রশ্ন রয়েছে। দলের একটি অংশ প্রমোদের প্রশাসন চালানোর পদ্ধতি নিয়ে খুশি নয়। প্রমোদের দুর্বল অবস্থানের সুযোগ নিয়ে গোয়ার কুর্সি দখলে তৎপর হন বিশ্বজিত রাণে। যদিও শেষ পর্যন্ত পুরনো নেতৃত্বের উপরেই ভরসা রেখেছে দল। বিজেপি সূত্রের মতে, যেহেতু ওই দুই নেতার হাত ধরেই দুই রাজ্যে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দখল করা গিয়েছে, তাই তাঁদের সরালে দলীয় কর্মী ও বিজেপি-শাসিত অন্য রাজ্যগুলিতে ভুল বার্তা যেতে পারে বুঝে পিছিয়ে আসেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। শেষ পর্যন্ত দলে বিরোধিতা থাকলেও প্রমোদ ও বীরেনের নামেই সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়।
তবে উত্তরাখণ্ড নিয়ে এখনও টানাপড়েন জারি রয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একাংশ যখন হেরে যাওয়া মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামীর উপরে ভরসা রাখতে চাইছেন, তখন অন্য দিকে সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নাম উঠে এসেছে সতপাল মহারাজ, ধন সিংহ রাওয়তের।
সব ঠিক থাকলে আগামী ২১ মার্চ লখনউয়ে শপথ নিতে চলেছেন যোগী আদিত্যনাথ। মন্ত্রিসভা ঠিক করতে আজ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেন যোগী। উপস্থিত ছিলেন সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা, রাজ্য সভাপতি স্বতন্ত্র দেও সিংহ, উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী দীনেশ শর্মা । প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, যোগীর দ্বিতীয় মন্ত্রিসভায় ৫৭ জন মন্ত্রী শপথ নেবেন।