মরিয়া বিজেপির অস্ত্র এখন নীতীশদের গুরুই

বিহারে ভোট শুরু কাল। তার ঠিক এক দিন আগে ভোট-অঙ্ক মাথায় রেখে দেশ জুড়ে জয়প্রকাশ নারায়ণের জন্মবার্ষিকী পালনে মাতল বিজেপি। আর অস্বস্তি কাটাতে সে পথ প্রায় মাড়ালেনই না লালু-নীতীশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও পটনা শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৫ ০৪:২০
Share:

জয়প্রকাশ নারায়ণকে শ্রদ্ধা অমিত শাহের। রবিবার পটনায়।-নিজস্ব চিত্র

বিহারে ভোট শুরু কাল। তার ঠিক এক দিন আগে ভোট-অঙ্ক মাথায় রেখে দেশ জুড়ে জয়প্রকাশ নারায়ণের জন্মবার্ষিকী পালনে মাতল বিজেপি। আর অস্বস্তি কাটাতে সে পথ প্রায় মাড়ালেনই না লালু-নীতীশ।

Advertisement

আজ জয়প্রকাশ নারায়ণের ( জেপি) জন্মবার্ষিকী ধুমধাম করে পালন করার পিছনে একটাই মন্ত্র ছিল বিজেপি নেতৃত্বের। কংগ্রেস বিরোধিতা। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এক সময় আন্দোলন করেছিলেন জেপি। তাঁর শিষ্য হয়েও আজ সেই কংগ্রেসের হাত ধরেছেন লালু-নীতীশ। মহাজোটের এই ভোটব্যাঙ্কে ফাটল ধরাতেই আজ দিল্লিতে ঘটা করে জেপির জন্মদিবস পালন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাশে বসালেন দলে এত দিন ধরে প্রায় ব্রাত্য লালকৃষ্ণ আডবাণীকেও। পরে জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই করা অন্য দুই অসুস্থ নেতা অটলবিহারী বাজপেয়ী আর জর্জ ফার্নান্ডেজকেও দেখে আসেন তিনি। দলের সভাপতি অমিত শাহ আবার ছুটে গিয়েছেন বিহারের সিতাবদিয়ারায়। জেপির জন্মভিটেতে। রাজনাথ সিংহ, রবিশঙ্কর প্রসাদরা যান কদমকুঁয়ায় জেপির বাড়িতে।

গোটা ঘটনায় অস্বস্তির পারদ চড়েছে মহাজোট শিবিরে। পটনার আয়কর চকে জেপির মূর্তির নীচে সরকারি অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের সঙ্গে আজ হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। কিন্তু মাল্যদান পর্ব সাঙ্গ করেই বেরিয়ে যান নির্বাচনী প্রচারে। আর যে লালু প্রচার করতেন, তিনিই জেপির আসল উত্তরসূরি, আজ তাঁর মুখে জেপি নিয়ে কোনও কথাই শোনা যায়নি। মহাজোটের নেতাদের বক্তব্য, ভোটের সময় বিজেপি জয়প্রকাশকে ব্যবহার করতে চাইছে বলেই এত বেশি মাতামাতি করছে।

Advertisement

তবে মহাজোটের নেতারা ঘরোয়া স্তরে নাকি কবুল করছেন, যে ভাবে বিজেপি সুকৌশলে জেপিকে নিয়ে প্রচার করছেন, তাতে তাঁদের অস্বস্তি বাড়ছে বই কমছে না। কারণ, জেপির আন্দোলনের মূল অস্ত্রই ছিল কংগ্রেস বিরোধিতা। সেই আন্দোলন থেকেই এক নতুন রাজনৈতিক প্রজন্ম তৈরি হয়েছে। আর ভোটের অঙ্ক মেনে এখন সেই প্রজন্মকেই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধতে হয়েছে। সেখান থেকে পিছিয়ে আসার কোনও সম্ভাবনাই আর নেই। ভোট মরসুমে সেই জায়গাতেই আঘাত করতে চাইছে বিজেপি। প্রতিটি নির্বাচনী প্রচারে মোদী বারবার মনে করাচ্ছেন, জেপিকে আজ লালু-নীতীশ ভুলে গিয়েছেন। আজ অমিত শাহও বলেছেন, ‘‘লালু-নীতীশ জেপিকে ভুলে কংগ্রেসের কোলে আশ্রয় নিয়েছেন।’’

আজ দিল্লির বিজ্ঞান ভবনের অনুষ্ঠানেও মোদী একই পথ বেছেছেন। জানিয়েছেন, কারও সমালোচনার জন্য নয়, গণতন্ত্র রক্ষা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য জেপি যে পথ দেখিয়েছেন, সেটির জন্যই জরুরি অবস্থা মনে রাখা দরকার। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘জীবনে কিছু শিখতে কখনও কখনও খারাপ বিষয়ও মনে রাখতে হয়।’’ বিকেলে মুম্বইয়ে অম্বেডকর স্মারকের শিলান্যাসের সময়ও তাঁর নজর ছিল বিহারেই। সেখানেও জেপির প্রসঙ্গ তুলেছেন তিনি। জেডি(ইউ) নেতা কে সি ত্যাগী আজ আবার এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘যে দিন জেপি গ্রেফতার হয়েছিলেন, সে দিন নীতীশ কুমার ও লালু প্রসাদও গ্রেফতার হয়েছিলেন। নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহ নন। ফলে লড়াই এখন আসল জেপি আর নকল জেপির।’’ আরজেডির মনোজ ঝা-র বক্তব্য, ‘‘আমরা এখনও জেপির আদর্শ নিয়ে চলছি। আর বিজেপি এখন ভোটের সময় রাজনীতির রুটি সেঁকছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement