তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। —ফাইল ছবি।
আরজি কর কাণ্ডে কিছুটা কোণঠাসা তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেসের মতো বিরোধী মঞ্চের অন্যতম প্রধান শরিকও আবেগের বিপরীতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। প্রশাসনের গাফিলতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল গান্ধী। এই পরিস্থিতিতে ক্ষত মেরামতির কাজে নয়াদিল্লিতে সক্রিয় হল তৃণমূল। আজ দিল্লি থেকে তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এক্স হ্যান্ডলে আরজি করের ঘটনার তীব্র নিন্দা করে সিবিআইয়ের উপরে চাপ তৈরি করেছেন।
রাহুলের পরে আজ তাঁর বোন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা একযোগে কলকাতা, বিহার, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশে নারী-নির্যাতনের ঘটনার উল্লেখ করে এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘যখনই মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে কড়া বার্তা দেওয়ার দরকার পড়ে, তখনই অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টা হয়।’ অভিযুক্তদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হয় বলেও তাঁর অভিযোগ। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, প্রিয়ঙ্কা নির্দিষ্ট কোনও প্রশাসনের সমালোচনা না করলেও এই ধরনের ঘটনায় দলীয় অবস্থান ফের এক বার স্পষ্ট করেছেন।
এ দিকে, ডেরেক আজ তাঁর পোস্টে লেখেন, “কলকাতায় এক তরুণীকে হত্যা এবং নির্যাতনের যে ঘটনা ঘটেছে, তার চেয়ে জঘন্য অপরাধ চিন্তাও করা যায় না। জনসাধারণের ক্রোধের কারণ সহজবোধ্য।” আরজি কর নিয়ে মমতার পদযাত্রার তিনটি উদ্দেশ্যের কথা বলেন ডেরেক। তাঁর বক্তব্য, “এই মুহূর্তে যারা মামলাটির তদন্ত করছে, সেই সিবিআই-কে তাদের অগ্রগতির বিষয়ে প্রতিদিন জানাতে হবে। কলকাতা পুলিশকে মুখ্যমন্ত্রী সময় বেঁধে দিয়ে বলেছিলেন, ১৭ অগস্টের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে। সিবিআই-এর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কলকাতা পুলিশ এক জন অভিযুক্তকে ধরেছিল। তখনই সঠিক বিচার হবে যখন সিবিআই সংশ্লিষ্ট সকলকে ধরতে পারবে এবং মামলাটিকে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে পাঠাতে পারবে।” ডেরেকের দাবি, সিবিআই যেন নীরবে তদন্তকে ‘মাটিতে পুঁতে’ না ফেলে। এখন দ্রুত বিচার এবং অপরাধীদের কঠোর সাজাটাই জরুরি। তিনি বলেন, ‘‘এই বর্বরোচিত কাজ যারা করেছে, তারা যেন কেউ ছাড় না পায়। যারা হাসপাতাল আক্রমণ করে করেছিল, তাদেরও সাজা প্রয়োজন। পুলিশ ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে।”
আরজি কর-কাণ্ডের পরে ‘ইন্ডিয়া’-র বাকি শরিকদের মুখ বন্ধ থাকা নিয়ে বিজেপি কটাক্ষ করায় অস্বস্তি তৈরি হয় বিরোধী শিবিরে। বিশেষত কংগ্রেসের বাইরে ও ভিতরে চাপ তৈরি হচ্ছিল। অধীর চৌধুরী, দীপা দাশমুন্সির মতো নেতারা রাহুল-মল্লিকার্জুন খড়্গেদের জানান, এই নিয়ে দলের অবস্থান নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। তার পরেই রাহুল এক্স হ্যান্ডলে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকায় প্রশ্ন তোলেন। কলকাতায় পাঠানো হয় মহিলা কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভানেত্রী অলকা লাম্বাকে।
এসপি নেতা অখিলেশ যাদব অবশ্য বলেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। আপনি তাঁর প্রতি আশা রাখবেন না? তিনি পদক্ষেপ করবেনই।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী এক্স হ্যান্ডলে এ দিন লেখেন, ‘বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধীদের মধ্যে আর কারও বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছোড়ার সেই দম নেই।’