নোটবন্দিতে বড়সড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশ, বলছে বিরোধীরা। মায়ানমার থেকেই সেই সমালোচনার জবাব দিলেন মোদী। ছবি: রয়টার্স।
সমালোচনার ঝড়ে পড়ে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নোটবন্দির সিদ্ধান্তের পক্ষে ফের জোর সওয়াল করলেন। ব্রিকস সম্মেলন সেরে দু’দিনের মায়ানমার সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বুধবার সে দেশের ভারতীয় সম্প্রদায়ের এক সমাবেশে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। মায়ানমারবাসী ভারতীয়দের সামনে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, দেশের স্বার্থে যে কোনও কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে তাঁর সরকার প্রস্তুত। ‘‘জাতীয় স্বার্থে বড় এবং কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে আমরা ভয় পাই না, কারণ আমাদের কাছে রাজনীতির অনেক উপরে দেশ।’’ বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বার্ষিক রিপোর্টে সম্প্রতি জানানো হয়েছে, যে সব নোট বাতিল করা হয়েছিল, তার প্রায় পুরোটাই ব্যাঙ্কে জমা পড়ে গিয়েছে। অর্থাৎ, নোটবন্দির ফলে বিপুল পরিমাণ কালো টাকা এবং জাল টাকা নষ্ট হয়ে যাবে বলে সরকার যে দাবি করেছিল, তা ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বার্ষিক রিপোর্টকে হাতিয়ার করে অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা এবং বিরোধী দলগুলি কেন্দ্রীয় সরকারকে তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করতে শুরু করেছে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী বুঝিয়ে দিলেন, আক্রমণের মুখে তিনি পিছু হঠবেন না। মায়ানমারে আয়োজিত কর্মসূচিতে মোদী বলেছেন, ‘‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হোক, নোটবন্দি হোক বা জিএসটি, সব সিদ্ধান্তই নির্ভয়ে এবং দ্বিধাহীন ভাবে নেওয়া হয়েছিল।’’
আরও পড়ুন: অস্বস্তি এড়াতে জঙ্গিদের রুখতেই হবে: বিরল স্বীকারোক্তি পাকিস্তানের
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হিসেব যা-ই বলুক, কালো টাকার রমরমা রুখতে নোটবন্দির মতো সিদ্ধান্ত অত্যন্ত জরুরি ছিল বলে নরেন্দ্র মোদী বুধবার সন্ধ্যার ভাষণেও ফের দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘দুর্নীতি রুখতেই আমরা ৫০০ টাকা এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল করেছিলাম। মুষ্টিমেয় দুর্নীতিগ্রস্ত লোকের কুকর্মের ফল ভোগ করতে হচ্ছিল ১২৫ কোটি মানুষকে। এটা মেনে নেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না।’’ নোটবন্দির ফলে এমন লক্ষ লক্ষ লোকের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, ব্যাঙ্কে কোটি কোটি টাকা থাকা সত্ত্বেও যাঁরা কর দিতেন না, জানিয়েছেন মোদী।
আরও পড়ুন: গৌরী-হত্যায় প্রধানমন্ত্রী নীরব কেন? বিদ্ধ বিজেপি
জিএসটি-র পক্ষেও জোর সওয়াল করেছেন মোদী। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা ভারতে শুধু সংস্কার করছি না, ভারতের রূপান্তর ঘটাচ্ছি। আমরা ভারতকে শুধু বদলাচ্ছি না, নতুন ভারত গড়ছি।’’ ২০২২ সাল নাগাদ এই সব সিদ্ধান্তের সুফল দেশবাসীর সামনে স্পষ্ট হয়ে যাবে বলেও প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন।