বোরখা পরে নিজেরই বাড়িতে ডাকাতি করেন তরুণী। ছবি: সংগৃহীত।
ভরদুপুরে ডাকাত পড়েছিল বাড়িতে! লক্ষ টাকার সোনা ও রুপোর গয়না এবং নগদ ২৫ হাজার টাকা চুরি গিয়েছিল। তার পরেই থানায় গিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন মহিলা। পুলিশি তদন্তে যা উঠে এল, তাতে নিজের চোখ-কানকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না অভিযোগকারিণী। জানা গিয়েছে, তাঁরই বড় মেয়ে ঘটিয়েছেন পুরো ঘটনা। এমন কাণ্ড করার কারণ, তাঁর ধারণা ছিল, মা ছোট মেয়েকে বেশি ভালবাসেন। বোনের প্রতি ঈর্ষা থেকে নিজেরই বাড়িতে ডাকাতি করেন তরুণী!
ঘটনাটি দিল্লির উত্তম নগরের সেবক পার্ক এলাকার। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩০ জানুয়ারি, কমলেশ নামে এক মহিলা থানায় গিয়ে ডাকাতির অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর বয়ানের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, বাইরে থেকে কেউ জোর করে বাড়িতে ঢুকেছিল, তেমন কোনও প্রমাণ নেই। আলমারির তালাও অক্ষত ছিল।
তখন এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। তাতে দেখা যায়, বোরখা পরা এক মহিলা দরজা খুলেই বাড়িতে ঢুকছেন। তার পরেই আরও তদন্ত করে কমলেশের জ্যেষ্ঠা কন্যা শ্বেতাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় শ্বেতা ডাকাতির কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, মা ছোট বোনকে বেশি ভালবাসেন। ঈর্ষা ও ঘৃণা থেকেই তিনি বাড়িতে চুরি করেছেন বলে জানিয়েছেন। তবে সেটাই এক মাত্র কারণ নয়। শ্বেতা পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁর বেশ কিছু টাকা ধার হয়ে গিয়েছিল। তা শোধ করতেই ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিলেন। যা যা গয়না তিনি চুরি করেছিলেন, তার মধ্যে কয়েকটি ছিল তাঁর নিজের, যেগুলি মায়ের কাছে রাখতে দিয়েছিলেন তিনি। বাকিগুলি তাঁর মা বোনের বিয়ের জন্য তৈরি করিয়েছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য শ্বেতা জানুয়ারি মাসেই আলাদা থাকতে শুরু করেন। কমলেশ বড় মেয়েকে নতুন বাড়ি সাজাতে সাহায্য করেছিলেন। ছোট মেয়ে কাজে বেরিয়ে যাওয়ার পর তিনি শ্বেতার বাড়িতে যেতেন। এরই সুযোগ নেন শ্বেতা।
ঘটনার দিন শ্বেতা প্রথমে তাঁর মায়ের বাড়ির চাবি চুরি করে সব্জি কেনার অজুহাতে নতুন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এর পর তিনি একটি পাবলিক টয়লেটে গিয়ে বোরখা পরে মায়ের বাড়িতে হাজির হন। চাবি দিয়ে মূল দরজা এবং আলমারির লকার খুলে গয়না এবং নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যান শ্বেতা।
কমলেশ যখন ডাকাতির কথা জানতে পেরে মেয়েকে জানান, তখন শ্বেতা চিন্তিত ও বিচলিত হওয়ার ভান করেন। তিনি ভেবেছিলেন কেউ তাঁকে সন্দেহ করবে না। তবে সেই ভাবনা ধোপে টিকল না।
শ্বেতা পুলিশকে জানান, সব গহনা তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন। তবে পুলিশ শেষমেশ সেগুলি উদ্ধার করতে পেরেছে।