গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।
১০ দিনের জরুরি দূষণ অবস্থা কিছুটা আশা জাগিয়েছিল। কিন্তু দেওয়ালির দু’দিন আগে ফের ‘নাভিশ্বাস’ উঠল দিল্লির। সোমবার সকাল থেকেই রাজধানীতে বায়ুর দূষণ মাত্রা ‘সিভিয়ার’ বা মারাত্মক পর্যায়ে নেমে গিয়েছে। দেওয়ালির সময় এই মাত্রা আরও খারাপ অবস্থায় পৌঁছে যেতে পারে বলে আশঙ্কা আবহবিদদের।
সোমবার সকাল থেকেই রাজধানী দিল্লি ঢাকা পড়েছে ঘন ধোঁয়াশার চাদরে। দৃশ্যমানতা কম। তার সঙ্গে রবিবারের চেয়ে বাতাসে দূষণের মাত্রা বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা দূষণ পরিমাপক পার্টিকুলেট ম্যাটার (২.৫) পৌঁছে গিয়েছে ৬৪৪-এ যা নিরাপদ মাত্রার চেয়ে ২০ গুণ খারাপ। ফলে কার্যত দিল্লির বাতাস ভরে গিয়েছে বিষবাস্পে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ২.৫ মাত্রার ধূলিকণা বাতাসে বেশি থাকলে ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের পক্ষে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর।
পশ্চিমী ঝঞ্ঝা সরে গিয়ে মেঘমুক্ত আকাশ এবং বাতাসের গতিবেগ কমে গিয়েছে। এই পরিষ্কার আবহাওয়ায় দূষণ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রের সিস্টেম অব এয়ার কোয়ালিটি ফোরকাস্টিং অ্যান্ড রিসার্চ বা ‘সফর’। সফর-এর পূর্বাভাস, সোমবার বিকেলের দিকে এই পার্টিকুলেট ম্যাটার ‘অত্যন্ত খারাপ’ পর্যায়ে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: আমাদের থেকে উন্নয়ন প্রকল্পের দান নিয়ে মূর্তি বানাচ্ছ? ফুঁসছে ব্রিটেন
গত ১ নভেম্বর থেকে দিল্লিতে চলছে দূষণ সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা। সব রকম নির্মাণ বন্ধ করা হয়েছে। মিক্সিং-সহ যে সমস্ত কারখানায় ধুলোবালি তৈরি হয়, সেগুলির উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে দিল্লি সরকার। তার সঙ্গে পশ্চিম ঝঞ্ঝার জেরে বাতাসে হাওয়ার গতিবেগও বেশি ছিল। ফলে ১ নভেম্বর জরুরি অবস্থা শুরুর পর থেকে দূষণ বেশ খানিকটা কমেছিল।
আরও পডু়ন: ঋণখেলাপির তালিকা: রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের কাছে উত্তর তলব করল তথ্য কমিশন
কিন্তু সোমবার থেকে সরে গিয়েছে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। তার সঙ্গে উত্তর ভারত জুড়েই ধান ও অন্যান্য শষ্যের খড় পোড়ানোও অব্যাহত রয়েছে। ফলে রবিবারের তুলনায় দূষণের মাত্রা এক লাফে বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। বুধবার দেওয়ালি। মঙ্গলবার থেকেই শুরু হবে আতসবাজি পোড়ানো। বুধ-বৃহস্পতিবার পর্যন্তও সেটা চলবে অনেক জায়গায়। ফলে আলোর উৎসবের সময় রাজধানীর বাতাস আরও দূষিত হয়ে ভয়ঙ্কর মাত্রায় চলে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন আবহবিদদের একটা বড় অংশ।
আরও পড়ুন: ‘চূড়ান্ত সময়সীমা’ দিল আরএসএস, রামের চাপে নাকাল মোদী
ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মেটেরলজির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উত্তর-পূর্ব ভারতে ফসলের খড় পোড়ানো নিয়ন্ত্রণে না রাখলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। দূষণ সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা চলছেই। তার মধ্যেও দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে। ফলে নতুন করে যানবাহনের উপর কড়া নজরদারি রাখার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটি। কোথাও যাতে যানজট না হয়, তার জন্যও ট্রাফিক পুলিশকে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।