kashmir Railline

সুড়ঙ্গ-বিপর্যয় সামলে সমতলে জুড়ছে কাশ্মীর

বৈষ্ণোদেবী মন্দির সংলগ্ন ত্রিকূট পাহাড়ের বুক চিরে তৈরি হওয়া সুড়ঙ্গে এক সময়ে পর পর তৈরি হওয়া প্রতিকূলতার কারণে প্রকল্প সম্পূর্ণ করা নিয়েই সংশয় তৈরি হতে বসেছিল।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম 

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:১৩
Share:

রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। —ফাইল চিত্র।

উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুলা রেল লিঙ্ক প্রকল্পে পথের কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছিল কাটরা লাগোয়া ৩৩ নম্বর সুড়ঙ্গ খননের কাজ। বৈষ্ণোদেবী মন্দির সংলগ্ন ত্রিকূট পাহাড়ের বুক চিরে তৈরি হওয়া সুড়ঙ্গে এক সময়ে পর পর তৈরি হওয়া প্রতিকূলতার কারণে প্রকল্প সম্পূর্ণ করা নিয়েই সংশয় তৈরি হতে বসেছিল। মাত্র ৩২০৯ মিটার লম্বা সুড়ঙ্গ নির্মাণের ক্ষেত্রে সমস্যার জেরে সমতলের সঙ্গে কাশ্মীরের পাহাড়কে জুড়ে দেওয়া যাবে কিনা, তা নিয়েই অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। কখনও সুড়ঙ্গের ভিতরে অনেকটা এলাকা জুড়ে ঝুরঝুর করে খসে পড়েছে চুনাপাথর, কখনও আবার পাথরের দেওয়াল ভেদ করে বেরিয়ে আসা জলের তোড় স্তব্ধ করে দিয়েছে কাজের গতি।

Advertisement

অনেকটা কলকাতার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর শিয়ালদহ-এসপ্লানেড অংশের মতোই যেন বিপত্তি বার বার ফিরে এসেছে সেখানে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় যেমন মাত্র ২.২ কিলোমিটার সুড়ঙ্গপথ নিয়ে সমস্যা, এখানেও তেমনই ৩.২ কিলোমিটার সুড়ঙ্গপথ নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। যা মেটাতে সময় লেগেছে প্রায় এক দশক।

উত্তর রেলের আওতায় এই সুড়ঙ্গ খননের কাজের দেখাশোনার ভার রয়েছে কোঙ্কন রেলের উপরে। রেল সূত্রের খবর, প্রচলিত পদ্ধতিতে মাত্র ৮৬৮ মিটার সুড়ঙ্গ খননের পরেই দেখা যায়, খননের সেই পথের মধ্যেই পড়েছে হিমালয়ের মূল সীমানা প্রাচীর। ভূমিকম্পগত বিচ্যুতির ফলে তৈরি হওয়া ওই প্রাচীর সমতলের সঙ্গে শিবালিক হিমালয়ের সীমানা তৈরি করেছে। ওই অংশে পাথরের চরিত্র বৈচিত্রপূর্ণ। ফলে ওই অংশে সুড়ঙ্গ খননের কাজে প্রভূত ঝুঁকি ছিল। খনন করতে গিয়ে সমস্যার কথা জানতে পারেন প্রযুক্তিবিদেরা।

Advertisement

পরিস্থিতি দেখে সুড়ঙ্গ খননের পদ্ধতি বদলাতে হয়। ‘নিউ অস্ট্রিয়ান টানেলিং মেথড’ (এনএটিএম)-এ ধীরে ধীরে সুড়ঙ্গ খননের কাজ শুরু হয়। কিন্তু কিছু দূর এগোতেই সুড়ঙ্গপথের বিভিন্ন অংশে ছাদ খসে পড়ার সমস্যা দেখা দেয়। সেই প্রতিকূলতা সামাল দিতে পৃথিবীর নানা প্রান্তের প্রযুক্তিবিদদের ডেকে এনে পরামর্শ নেওয়া হয়। শেষ পর্বে এসেও সুড়ঙ্গের দেওয়াল থেকে বেরিয়ে আসা জল বড় বাধা হয়ে দেখা দেয়। অনেকটা বৌবাজারের মতোই। গত বছর নভেম্বর মাসে সুড়ঙ্গ খননের কাজ মেটে। তবে, তার পরেও বাকি ছিল কংক্রিটের মেঝের উপরে রেললাইন পাতার কাজ। গত সপ্তাহে সেই কাজই মিটেছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।

নতুন বছরে সরাসরি দিল্লি থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালাতে চায় রেল। প্রায় ৮০০ কিলোমিটার পথ ১৩ ঘণ্টায় পাড়ি দেবে ট্রেন। আপাতত কলকাতার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় বৌবাজারের বিপত্তি সামলে কলকাতার পূর্ব এবং পশ্চিম জুড়ে যাওয়ার মতোই কাশ্মীরে উত্তরের হিমালয় দক্ষিণে সারা দেশের সঙ্গে জুড়ে যাওয়ার অপেক্ষায়। যার দিন গোনা শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন রেলকর্তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement