(বাঁ দিকে) প্রয়াত ক্যাপ্টেন অংশুমানের স্ত্রী স্মৃতি। প্রয়াত ক্যাপ্টেন অংশুমান সিংহ (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
প্রয়াত ক্যাপ্টেন অংশুমানের স্ত্রী স্মৃতি সম্পর্কে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল দিল্লিরই এক বাসিন্দার বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩-এর ৭৯ নম্বর ধারা এবং তথ্যপ্রযুক্তির ৬৭ নম্বর ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ দায়ের করেছিল জাতীয় মহিলা কমিশন। ওই ব্যক্তির সেই মন্তব্যের বিরোধিতা করে দিল্লি পুলিশকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার জন্য চিঠিও দেওয়া হয় তাদের পক্ষ থেকে। শুধু তা-ই নয়, তিন দিনের মধ্যে এ বিষয়ে পুলিশের কাছে রিপোর্টও চাওয়া হয়েছে। জাতীয় মহিলা কমিশনের সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখার পর দিল্লি পুলিশ ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩ এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০০০-এর সংশ্লিষ্ট ধারায় এফআইআর দায়ের করেছে। তদন্তও শুরু হয়েছে।
গত ৫ জুলাই দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান মরণোত্তর ‘কীর্তি চক্র’ দেওয়া হয় প্রয়াত ক্যাপ্টেনকে। সেখানে তাঁর পরিবারের হাতেই সেই সম্মান তুলে দেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ‘কীর্তি চক্র’ হাতে নিয়ে নিজের আবেগকে ধরে রাখতে পারেননি ক্যাপ্টেনের স্ত্রী স্মৃতি সিংহ। কাঁদতে কাঁদতেই তাঁদের দু’জনের গড়ে ওঠা সম্পর্কের স্মৃতিচারণা করতে দেখা যায় ক্যাপ্টেনের স্ত্রীকে। ওই দিন ক্যাপ্টেনের কথা প্রসঙ্গে স্মৃতি জানান, পরস্পরকে কলেজজীবন থেকে চিনতেন। সেই সময়েই তাঁদের প্রেম। ১৮ জুলাই তাঁদের দু’জনের অনেক কথা হয়। আগামী ৫০ বছরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও ঠিক করেছিলেন। কী ভাবে সংসার করবেন, কী ভাবে সন্তান মানুষ করবেন— নানা বিষয়ে তাঁদের কথা হয়। কিন্তু ১৯ জুলাই ফোন আসে অংশুমান আর নেই। প্রথম ৭-৮ ঘণ্টা বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না এ রকম একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে।
রাষ্ট্রপতির হাত থেকে মরণোত্তর কীর্তি চক্র নেওয়ার পর স্মৃতি বলছিলেন, ‘‘এখনও অনেক সময়ই বিশ্বাস হয় না ও নেই। কিন্তু যখন দেখি এই কীর্তি চক্রটা, তখন বিশ্বাস করতে বাধ্য হই ও সত্যিই আর নেই। তবে ও তো সত্যিকারের ‘হিরো’…।’’ ২০২৩ সালের ১৯ জুলাই সিয়াচেনে সেনাশিবিরের গোলাবারুদ রাখার ঘরে আগুন ধরে গিয়েছিল। ক্যাপ্টেন অংশুমান চার-পাঁচ জনকে উদ্ধার করেন। কিন্তু সেই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল তাঁর।