—প্রতীকী চিত্র।
প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গোপন নথি পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগে এক সেনা-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ। আর এই ঘটনায় জড়িয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের হাই কমিশনও।
সেনা সদর দফতরের তরফেও বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, পোখরানের সেনা আবাসে আনাজ সরবরাহের কাজে যুক্ত হাবিব খান ওরফে হাবিবুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে টাকার বিনিময়ে ওই গোপনীয় তথ্য সরবরাহ করেছিল এক সেনা। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, এই ঘটনায় জড়িত রয়েছে পাকিস্তানের হাই কমিশনও। অভিযোগ, হাই কমিশনে কর্মরত কামাল নামে এক ব্যক্তিই ভয় দেখিয়ে হাবিবুরকে দিয়ে গোপন নথি জোগাড়ের বন্দোবস্ত করেছিল। দিল্লি পুলিশের দাবি, জেরায় হাবিবুরও জানিয়েছে পাক হাই কমিশনের ওই ব্যক্তির কথা।
সূত্র মারফত দিল্লির অপরাধ দমন শাখা খবর পেয়েছিল, প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিশেষ তথ্য পাক গুপ্তচরদের কাছে পৌঁছচ্ছে। তার পরেই অভিযান চালায় দিল্লি পুলিশ। মঙ্গলবার হাবিবুরকে রাজস্থানের পোখরান থেকে গ্রেফতার করা হয়। দিল্লির পুলিশ সুপার (অপরাধ) প্রবীণ রঞ্জন সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, হাবিবুরের কাছ থেকে বিশেষ কিছু অঞ্চলের মানচিত্র-সহ বেশ কিছু গোপনীয় তথ্য উদ্ধার করা হয়েছে। সরকারি তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা আইনের আওতায় তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।
হাবিবুর জেরায় জানিয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে পরমজিৎ কউর নামে এক সেনা। সে বর্তমানে আগরা ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত। এর আগে পোখরানের সেনা শিবিরে পোস্টিং ছিল তার। সেখানেই হাবিবুরের পরিচয়। হাবিবুরই তাকে বিপুল অর্থের বিনিময়ে গোপন নথি সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছিল।
হাবিবুর রাজস্থানের বিকানেরের বাসিন্দা। তার কয়েক জন আত্মীয় থাকেন পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে। সেখানে যাতায়াতের জন্য ভিসা জোগাড়ের সূত্রেই পাক হাই কমিশনে যাতায়াত ছিল হাবিবুরের। সে জানিয়েছে, পাক হাই কমিশনের এক ব্যক্তি তাকে প্রস্তাব দেয়, যদি সে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গোপন নথি জোগাড় করে দিতে পারে, তবেই পাকিস্তানের ভিসা পাবে। এর পাশাপাশি হাওয়ালার মাধ্যমে হাবিবুরকে আইএসআই টাকা পাঠাত বলেও অভিযোগ। একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে এই আর্থিক লেনদেন চালানো হয়েছে। সেই টাকা থেকেই হাবিবুর পরমজিৎকে টাকা দিত বলে অভিযোগ। তদন্তকারীদের অনুমান, তথ্য সরবরাহের বিনিময়ে পরমজিৎ আট থেকে ন’লক্ষ টাকা পেয়েছে। এই ঘটনায় পরমজিৎকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে সেনা অফিসারেরা। প্রয়োজনে তাকে দিল্লি পুলিশের হাতেও তুলে দেওয়া হতে পারে বলে সেনা সূত্রের খবর।
এ দিকে জম্মু-কাশ্মীরে সাম্প্রতিক কালে একের পর সেনা অভিযান প্রসঙ্গে সেখানকার এক পুলিশ অফিসার বলেছেন, ‘‘গত ২ সপ্তাহে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে ২২ জন জঙ্গি।’’