Delhi Violence

পুলিশের হাতে পপুলার-কর্তারা

দিল্লি সংঘর্ষে আর্থিক মদত দেওয়ার অভিযোগে গত কালই পিএফআই-য়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল ইডি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২০ ০৪:২৩
Share:

ছবি এপি

দেশ-বিরোধিতা ও দিল্লির গোষ্ঠী সংঘর্ষে পিছন থেকে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে বিতর্কিত মুসলিম সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া (পিএফআই)-এর দুই শীর্ষ কর্তাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহ ছাড়াও ‘হিন্দুদের বিরুদ্ধে’ সংঘাত ছড়ানোর অভিযোগ এনেছে পুলিশ। কেরলের ওই সংগঠনটি অসমে ও উত্তরপ্রদেশে গোষ্ঠী সংঘর্ষের পিছনে দায়ী থাকায় ইতিমধ্যেই পিএফআই-কে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দুই রাজ্য। এ দিকে দিল্লি পুলিশের কর্মী রতনলাল ও গোয়েন্দা কর্মী অঙ্কিত শর্মার হত্যাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে আজ রাজ্যসভায় জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

Advertisement

দিল্লি সংঘর্ষে আর্থিক মদত দেওয়ার অভিযোগে গত কালই পিএফআই-য়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল ইডি। আজ উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে সংঘর্ষ ছড়ানোর অভিযোগে সংগঠনের দিল্লি শাখার সভাপতি পারভেজ আহমেদ ও সচিব ইলিয়াসকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। সিএএ পাশ হওয়ার পর থেকে গোটা দেশে আন্দোলনে পিএফআইয়ের হাত রয়েছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের। এমনকি শাহিন বাগের আন্দোলনের পিছনেও আর্থিক সাহায্যের অভিযোগ রয়েছে ওই সংগঠনের বিরুদ্ধে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, সিএএ পাশ হওয়ার পরে দেশ জুড়ে আন্দোলনে ইন্ধন ছিল পিএফআই-এর। গোয়েন্দাদের দাবি, গত চার মাসে প্রায় ১২০ কোটি টাকা ওই সংগঠনের তহবিলে জমা পড়েছে। যার মধ্যে অন্তত ৫০ কোটি টাকা কারা পাঠিয়েছে তার কোনও হদিশ জানে না সংগঠনের কর্তারাই।

সূত্রের মতে, ওই টাকার একটি বড় অংশ শাহিন বাগ-সহ দিল্লির বিভিন্ন অংশে সরকার-বিরোধী ধর্না-বিক্ষোভে আয়োজন করার জন্য খরচ করা হয়েছে। শাহিন বাগের বিক্ষোভে যোগদানকারীদের ফি দিন নগদ টাকা দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে যে টাকার একটি অংশ খরচ হয়েছে দিল্লিতে হওয়া গোষ্ঠী সংঘর্ষের প্রস্তুতিতে। টাকার একটি অংশ গিয়েছে আপ কাউন্সিলার তাহির হুসেনের কাছেও। তার বিরুদ্ধে টাকা নয়ছয় বিরোধী আইনেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আজ রাজ্যসভায় অমিত শাহ বলেন, ‘‘হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পাঠানোয় ৫ জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ শাহিন বাগ আন্দোলনের প্রধান উদ্যোক্তা শাহিন কওসর অবশ্য বলেন, ‘‘শুরুর দিন থেকে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। সেই ধাঁচে আন্দোলন ছড়িয়েছে দেশের অন্যত্র। কিন্তু সরকার পরিকল্পিত ভাবে হিংসার দায় আমাদের উপরে চাপাচ্ছে।’’ পিএফআইয়ের মতো সংগঠন থেকে আর্থিক সাহায্য পাওয়ার প্রশ্নে শাহিন বলেন, ‘‘এ রকম কোনও কিছু অন্তত আমার চোখে পড়েনি। বড় জোর আন্দোলনকারীদের খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে শীতের কম্বল দেওয়ায় কিছু মানুষ ব্যক্তিগত স্তরে এগিয়ে এসেছেন।’’

Advertisement

একই সঙ্গে দিল্লি সংঘর্ষে আম আদমি পার্টির ভূমিকা ক্রমশ সামনে আসছে বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। প্রথমে গ্রেফতার হয় আপের কাউন্সিলার তাহির হুসেন। এ বার নাম উঠেছে আপের রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জয় সিংহের। ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, পিএফআইয়ের সভাপতি পারভেজ আহমেদেরৃ মোবাইল ট্যাবলেট থেকে তাঁর সঙ্গে আপের সঞ্জয় সিংহের বহু কথোপকথন মিলেছে। ওই কথোপকথনের সঙ্গে সংঘর্ষের মদত দেওয়ার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কংগ্রেস নেতা উদিত রাজের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখত পারভেজ। দিল্লি সংঘর্ষে মারা গিয়েছিলেন পুলিশ কর্মী রতনলাল ও আই বি কর্মী অঙ্কিত শর্মা। অঙ্কিতকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল। আর বিক্ষোভকারীদের ছোঁড়া গুলিতে মারা যান রতনলাল। আজ অমিত জানান, ‘‘ভিডিও ক্লিপিং-এর ভিত্তিতে অঙ্কিতের হত্যাকারীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ধরা পড়েছে রতনলালের হত্যাকারীও।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement