গলা কেটে ধৃত প্রেমিকার পরিবার

নিহত অঙ্কিত সাক্সেনা (২৩) পেশায় ফোটোগ্রাফার ছিলেন। সেলস অফিসার হিসেবে কাজও করতেন। প্রেমিকা কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। বছর তিনেকের সম্পর্ক।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩৪
Share:

অঙ্কিত সাক্সেনা

প্রেমিকার পরিবারের হাতে এক যুবককে খুনের অভিযোগে এখনও উত্তপ্ত পশ্চিম দিল্লির রঘুবর নগর এলাকা। বৃহস্পতিবারের ওই ঘটনায় পুলিশ প্রেমিকার বাবা, মা এবং কাকাকে গ্রেফতার করেছে। আটক করা হয়েছে বছর কুড়ির ওই তরুণীর নাবালক ভাইকেও। বাবা-মা-কাকাকে ১৪ দিনের জন্য বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। জুভেনাইল হোম-এ পাঠানো হয়েছে ভাইকে।

Advertisement

নিহত অঙ্কিত সাক্সেনা (২৩) পেশায় ফোটোগ্রাফার ছিলেন। সেলস অফিসার হিসেবে কাজও করতেন। প্রেমিকা কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। বছর তিনেকের সম্পর্ক। কিন্তু অঙ্কিত ভিন‌্ ধর্মের বলে আপত্তি ছিল মুসলিম মেয়েটির পরিবারের। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার নিজের বাড়ির কাছেই গলা কেটে খুন করা হয়েছে অঙ্কিতকে। প্রেমিকার বাড়ির চার জনের সঙ্গে প্রথমে তাঁর কথা কাটাকাটি হয়। পুলিশের দাবি, অঙ্কিতের জন্য ওই সময়েই টেগোর গার্ডেন মেট্রো স্টেশনের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন তাঁর প্রেমিকা। তখনই মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ তুলে ওই পরিবার চড়াও হয় অঙ্কিতের উপরে।

পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ প্রথমে মেয়েটির বাবা-মা, কাকা এবং ১৪ বছরের ভাইয়ের সঙ্গে অঙ্কিতের বচসা হয়। পরিবারের হুমকি ছিল, অঙ্কিতকে তাঁদের মেয়ের কাছ থেকে সরে যেতে হবে। তর্কাতর্কি গড়ায় হাতাহাতিতে। মেয়েটির বাবা এই সময়েই হঠাৎ ছুরি বার করে অঙ্কিতের গলা চিরে দেয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে অঙ্কিতকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

Advertisement

ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা রঘুবর নগর। অঙ্কিতের বাড়ির সামনে ভিড় জমান অনেকেই। ওই তরুণের মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে বিচারের দাবি তোলেন তাঁরা। শুক্রবার সন্ধেয় কম্যান্ডো ও দু’ডজনেরও বেশি পুলিশ এলাকায়। অঙ্কিতের বাড়ি, ওই প্রেমিকার বাড়ি, অন্ত্যেষ্টিস্থল— সর্বত্র আছে বিএসএফ জওয়ান। খুনের পরপরই মেয়েটির কাকাকে স্থানীয়রা নিগ্রহ করেন বলে অভিযোগ। খুনের আধ ঘণ্টা পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে বলে দাবি। পালিয়ে যায় বাবা-মা, আর ভাই। ডিসিপি বিজয় সিংহের দাবি, ‘‘আমরা হাসপাতালের তরফে খবর পাই।’’ অঙ্কিতের মা কমলেশ সাক্সেনার বয়ানে উঠে এসেছে সে দিনের কথা। তিনি বলেন, তাঁদের বাড়ির কাছে স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল মেয়েটির পরিবার। অঙ্কিত কর্মস্থল থেকে ফেরার পরে সেখানে তাঁকে ধরে তারা। অঙ্কিতের মা বলেন, ‘‘কিছু গোলমাল হচ্ছে মনে হতেই বাইরে বেরিয়ে আসি। ওরা ছেলেকে মারছিল। স্বামীকে ডেকে দ্রুত ছুটে যাই।’’ কমলেশের কিছু দিন আগেই অস্ত্রোপচার হয়েছে। অঙ্কিতের বাবা যশপাল হৃদ্‌রোগী। তাঁরা অনুরোধ করেছিলেন ছেলেকে ছেড়ে দিতে। লাভ হয়নি।

বন্ধুদের কাছে খুনের কথা জেনে প্রায় বাক্‌রুদ্ধ অঙ্কিতের প্রেমিকা। তিনি পুলিশকে জানান, নিজের পরিবারকেই ভয় হচ্ছে। পুলিশের সঙ্গে কথার পরে অন্য এক আত্মীয়ের বা়ড়িতে রয়েছেন ওই তরুণী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement