‘ফরাস পর ব্যৈঠনা মানা হ্যায়’!
কিছু ক্ষণ পর পর এই ঘোষণা হয়ে চলেছে। না, শিয়ালদহ বা হাওড়া লোকাল নয়। এটি খোদ রাজধানীর মেট্রোর ঘোষণা!
দিল্লির মেট্রো পরিষেবার হিসাবে, কলকাতা মেট্রোর তুলনায় অনেক উন্নত প্রযুক্তির। চলা শুরু করে ভোর সাড়ে ৫টা থেকে, চলে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। দিল্লি এনসিআর (ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়ন) জুড়ে সুবিন্যস্ত মেট্রো পরিষেবা। কিন্তু সেই আন্তর্জাতিক মানের মেট্রো পরিষেবাতেই এ হেন ঘোষণা করতে হয় কেন?
কারণ, ঠিক যে ভাবে কলকাতার লোকাল ট্রেনে একটা দিকের দরজা জুড়ে অবলীলায় বসে থাকেন কিছু মানুষ, ঠিক তেমনই রাজধানীর মেট্রোতে অবলীলায় বহু মানুষ সিটে না বসে মাটিতে বসে যাতায়াত করেন। অফিস টাইমের ভিড়েও মাটিতে বসে যাতায়াতকারী যাত্রীর সংখ্যা কম থাকে না। এমনকী, ফাঁকা মেট্রোতেও! মহিলা কামরা হোক বা সাধারণ কামরা, সব দিকেই এই ছবি দেখতে পাওয়া যায়।
এ ভাবেই দিল্লি মেট্রোর মেঝেতে বসে যাতায়াত করছেন কিছু যাত্রী। নিজস্ব চিত্র।
এ ব্যাপারে দিল্লি মেট্রোর এক কর্তা বলেন, “এটি বন্ধ করার জন্য যা করণীয় তা করা হচ্ছে। মেট্রোর ভেতরে ঘোষণা করা হচ্ছে। স্টেশনে সিকিউরিটি কামরার ভেতরে গিয়ে দেখেন যাতে কেউ মাটিতে না বসে। কিন্তু তা-ও মাটিতে বসে যাতায়াত বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না”।
মেট্রো কর্তৃপক্ষ এ-ও বলছেন যে, “মাটিতে বসে থাকা কোনও যাত্রীকে আমরা যদি দেখতে পাই তা হলে মেট্রোর নির্ধারিত দু’শো টাকার জরিমানা করা হয়। তবে শুধু ঘোষণা বা জরিমানা করেও লাভ হয় না বিশেষ, কারণ যাত্রীরা এ সব কিছুই মানেন না।”
আরও পড়ুন: মেট্রোয় নয়া প্রযুক্তি
এ ব্যাপারে কী বলছেন যাত্রীরা? রাজধানীর মেট্রো রেলের এক যাত্রী সুনীতা সিংহ বললেন, “আমার বয়স হয়েছে, পায়ে ব্যথা, দাঁড়িয়ে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। ট্রেনে বয়স্কদের জন্য আলাদা সিট থাকলেও সাধারণত সে সিট পাওয়া যায় না। তাই বাধ্য হয়েই মাটিতে বসে যাতায়াত করি।”
শুধু বয়স্ক মানুষরাই নন, অল্প বয়সী ছেলেমেয়ে, বন্ধুদের দল সবাই অবলীলায় এ ভাবেই যাতায়াত করে। কিন্তু কেন? একদল ছাত্রের যেমন বক্তব্য: বন্ধুরা সব এক জায়গায় বসার মতো জায়গা না পাওয়া গেলে তারা এ ভাবেই বসে গল্প করতে করতে যায়। তাতে সবাই একসঙ্গে থাকা যায়। গুরগাঁওয়ের দিকের মেট্রোতে এক প্রবীণ যাত্রী বললেন, “মেট্রো বা অন্য ট্রেন, দুটোতেই আমরা এ ভাবে মাটিতে বসে যেতে অভ্যস্ত। সে জন্য আমাদের বিশেষ কিছু অসুবিধাও হয় না।”