অরুণাচলের তাওয়াংয়ে শস্ত্রপুজো রাজনাথের। মঙ্গলবার, অষ্টমীতে। —নিজস্ব চিত্র।
দশমী, দশেরায় রাবণ বধের দিনটা কাটানোর জন্য চিন অধিকৃত তিব্বত সীমান্তের তাওয়াংকেই বেছে নিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।
শুধু দূরবীনে চোখ রেখে চিনের গতিবিধি দেখাই নয়, সেনার মনোবল বাড়াতে অরুণাচলের তাওয়াংয়ে অস্ত্রপুজোতেও অংশ নিলেন তিনি। সেনাকে বার্তা দিলেন, “বিশ্বের অশান্তির আবহে, দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও মজবুত করা ভিন্ন উপায় নেই।’’ সোমবার সন্ধ্যায় অসমের তেজপুর সেনার ৪ নম্বর কোরের সদর দফতরে হাজির হন রাজনাথ। নৈশভোজে অংশ নেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘বড়াখানা (নৈশভোজ) সব স্তরের সেনাকর্মীদের একসঙ্গে, এক পরিবার হিসেবে কাজ করা ও একসঙ্গে দেশকে রক্ষা করার আদর্শে উদ্বুদ্ধ করে। বিভিন্ন রাজ্য, জাতি, ভাষা, সম্প্রদায় থেকে আসা সৈনিকদের মেলবন্ধন, আত্মত্যাগ, দেশপ্রেমের মধ্যে দিয়ে ভারতীয় সেনা বিশ্বের কাছে সুশৃঙ্খল ভ্রাতৃত্ববোধের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।’’
চিন বারবার অরুণাচলকে তাদের অংশ বলে দাবি করছে। অরুণাচলের বিভিন্ন অংশে চিনা সেনার ভারতের ভিতরে ঢুকে এলাকা দখলের চেষ্টার ঘটনা ঘটছে বারবার। আজ সকালে রাজনাথ প্রথমে বুম লা সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সফর করে সেনার প্রস্তুতি সরেজমিনে যাচাই করে নেন। সীমান্তে মোতায়েন সামরিক সরঞ্জাম ও আধুনিক সমর-পরিকাঠামোর বিষয়ে রাজনাথকে অবহিত করেন সেনাকর্তারা। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় মোতায়েন জওয়ানদের সঙ্গে দশেরা পালন ও মত বিনিময়ের পরে তিনি তাওয়াংয়ে এসে অস্ত্র পুজো করেন। শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান তাওয়াং যুদ্ধ স্মারক স্থল ও সুবেদার যোগিন্দর সিংহের স্মারকে। বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন অংশে চলা যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে রাজনাথ জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী না করে উপায় নেই। তাই যত বেশি সম্ভব দেশীয় সরঞ্জামে দেশের সামরিক ক্ষমতা বাড়াতে চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্র। আমদানি করা অস্ত্র নয়, আত্মনির্ভর ভারতে প্রধান সব অস্ত্র ও সামরিক পরিকাঠামো দেশেই তৈরি হচ্ছে।
বিদেশি সংস্থাগুলিকে বলা হচ্ছে, তারা যেন তাদের প্রযুক্তি ভারতের সঙ্গে ভাগ করে নেয় এবং সরঞ্জাম এ দেশেই তৈরি করে। ২০১৪ সালে যেখানে ভারতের সামরিক রফতানির পরিমাণ ছিল প্রায় হাজার কোটি, সেখানে আজ ভারত কয়েক হাজার কোটি টাকার অস্ত্রশস্ত্র রফতানি করছে।
এ দিকে, রাজনাথের সফরের দিনেই ইস্টার্ন এয়ার কমান্ড ৩০ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ‘পূর্বী আকাশ এক্সপিডিশন’-এর কথা ঘোষণা করল।