ফাইল চিত্র।
ইদের মুখেও হিংসা অব্যাহত রইল ভূস্বর্গে।
আজ দক্ষিণ কাশ্মীরের শোপিয়ানে ঔরঙ্গজেব নামে এক সেনা জওয়ানকে অপহরণ করে জঙ্গিরা। পরে পুলওয়ামার গুসু এলাকা থেখে তাঁর বুলেটবিদ্ধ দেহ উদ্ধার করা হয়। অন্য একটা ঘটনায় ছিনতাই করা হয়েছে এক জওয়ানের রাইফেল। বান্দিপোরায় যৌথ অভিযানে নিহত হয়েছে দুই জঙ্গি। সংঘর্ষের ওই আবহে আজ নয়াদিল্লিতে উপত্যকায় চালু থাকা সেনা অভিযান বন্ধের মেয়াদ বাড়ানো হবে কি না তা ঠিক করতে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের ডিজি এস পি বৈদ্যও।
সীমান্তে গুলিগোলা চালু থাকলেও দিনের আজ সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটেছে শোপিয়ানে। ইদের উৎসবে বাড়ি যাচ্ছিলেন সেনা জওয়ান ঔরঙ্গজেব। যে অভিযানে জঙ্গি নেতা সামির টাইগার নিহত হয় তাতে সামিল হয়েছিলেন রাজৌরির বাসিন্দা ওই জওয়ান। পুলওয়ামা ও শোপিয়ানের মধ্যে তাঁকে অপহরণ করে জঙ্গিরা। পরে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। অন্য দিকে পুলওয়ামা স্টেশনে সিআরপিএফের এক জওয়ানের রাইফেল ছিনতাই করেছে জঙ্গিরা। উত্তর কাশ্মীরের বান্দিপোরায় পানার জঙ্গলে যৌথ বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছে দুই জঙ্গি।
এ দিন দিল্লিতে রাজনাথের বাড়িতে কাশ্মীরের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে দিনভর বৈঠক চলে। চলতি সপ্তাহে কাশ্মীরে সেনা অভিযান বন্ধের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। মেহবুবার মতোই নীতিগত ভাবে সেনা অভিযান আরও কিছু দিন বন্ধ রাখার পক্ষে রাজনাথ সিংহ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একাংশ মনে করছে, সেনা অভিযান বন্ধ থাকায় সামান্য হলেও উপত্যকার মানুষের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে শাসক শিবির। কিন্তু শুরু থেকেই ওই পদক্ষেপে আপত্তি রয়েছে সেনার। বিশেষ করে যেখানে ২৮ জুন অমরনাথ যাত্রা শুরু হচ্ছে তার আগে এ ভাবে অভিযান বন্ধ রাখলে ভবিষ্যতে খেসারত দিতে হবে বলে সেনার পক্ষে এক দফা সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, সেনার পক্ষে বলা হয়েছে যাত্রা শুরুর অন্তত তিন থেকে পাঁচ দিন আগেই গোটা যাত্রাপথ ও সংলগ্ন এলাকা কড়া নিরাপত্তা দিয়ে মুড়ে ফেলতে হয়। যাতে জঙ্গি হামলা যতটা সম্ভব কমিয়ে আনা যায়। কিন্তু যাত্রার আগে যদি অভিযান বন্ধের নামে সেনার হাত বেঁধে দেওয়া হয় তাহলে যাত্রার সময়ে জঙ্গি হামলার সম্ভাবনা কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। বিশেষ করে যেখানে অমরনাথ যাত্রা জঙ্গিদের বরাবরই পছন্দের নিশানা। সামনের বছরই লোকসভা ভোট। তার আগে অমরনাথ যাত্রায় জঙ্গি হামলা হলে তার বিরূপ প্রভাব যে হিন্দু ভোটব্যাঙ্কের উপর পড়বে তা বুঝতে পারছেন বিজেপি নেতৃত্ব। উপরন্তু শুরু থেকেই সেনা অভিযান বন্ধের বিপক্ষে ছিল সঙ্ঘ পরিবার। এ যাবৎ তারা চুপ থাকলেও, অমরনাথ যাত্রার সময়ে হামলা হলে সঙ্ঘ ছেড়ে কথা যে বলবে না তা স্পষ্ট। এই পরিস্থিতিতে এ দিনের বৈঠকের পরে বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে চলেছেন রাজনাথ। তারপরেই এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।