পূর্বাভাস থেকে ৫-৬ ঘণ্টা আগেই ফণীর স্থলভাগে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা জানানো হয়েছিল আগেই। সেই মতো শুক্রবার সকালেই ১৯৫ কিমি বেগে ওড়িশায় আছড়ে পড়ল ফণী। শুরু হয়েছে প্রবল বৃষ্টি। বিধ্বস্ত জনজীবন।
তিন দিন উপগ্রহ চিত্রে গতিবিধির ওপর নজর রাখার পরে হাওয়া অফিস প্রথমে জানিয়েছিল, শুক্রবার বেলা তিনটের সময় বঙ্গোপসাগর থেকে ওড়িশার উপকূলে স্থলভূমিতে ঢুকবে সাইক্লোন ফণী। কিন্তু তার আগেই সকাল ৮টা ৫০ মিনিট নাগাদ ওড়িশায় ঢুকে পড়ল ফণী।
নৌসেনা জানিয়েছে, বিশাখাপত্তনম থেকে তিনটি জাহাজ ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে রওনা দিয়েছে। নজরদারি ও উদ্ধারের জন্য হেলিকপ্টারও তৈরি। সুপার সাইক্লোনে চূড়ান্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল নন্দনকাননও। তাই সেখানে বাড়তি সতর্কতা। সতর্ক সাধারণ মানুষও।
ওড়িশার ১১ লক্ষ মানুষকে ‘সাইক্লোন শেল্টার’-এ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ফণীর প্রভাব ওড়িশা ছাপিয়ে বাংলায় আছড়ে পড়ার কথা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। ফণী রাজ্যে ঢোকার সময়ে গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১১০ কিমি।
দিঘা-মন্দারমণি, শঙ্করপুর খালি করে দিতে বলা হয়েছে পর্যটকদের। পুরীর পর এ বার দিঘাগামী ট্রেনও বাতিল করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে দিঘা-হাওড়া কাণ্ডারী এক্সপ্রেস।
দিঘা থেকে পর্যটকদের ফেরাতে এসবিএসটিসি অতিরিক্ত ৫০টি বাসের ব্যবস্থা করেছে। বাস চলছে ৩০ মিনিট অন্তর। কলকাতা, দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলিতে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে।
নবান্নে খোলা হয়েছে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম। কুইক রেসপন্স টিমের ব্যবস্থা করেছে রেল।
সদর দফতর লালবাজারে ৭২ ঘণ্টার জন্য খোলা হচ্ছে বিশেষ কন্ট্রোল রুম। যার নম্বর ০৩৩-২২১৪৩২৩০ এবং ১০০। সেখান থেকেই পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হবে। কলকাতা পুলিশের ট্রেনিং স্কুলে জরুরি ভিত্তিতে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একটি বিশেষ দল তৈরি রাখা হয়েছে।
কলকাতার ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ড এলাকায় পড়ে থাকা গাছ কেটে রাস্তা সাফাইয়ের জন্য দুই থেকে তিনটি দল তৈরি থাকবে। যাতে পুলিশকর্মীরা দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারেন। একই সঙ্গে পর্যাপ্ত বিকল্প আলোর ব্যবস্থা রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
শহরের গঙ্গার ঘাটগুলিতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে প্রচার চালানো হচ্ছে যাতে মাঝিরা ঝড়ের সময়ে নদীতে না যান। বৃষ্টি বেশি হলে ওই সময়ে গঙ্গায় ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হয়েছে। পরিবহণ দফতরকে অনুরোধ করা হয়েছে শুক্রবার থেকেই শহরে ট্রাম চলাচল বন্ধ করতে।
কলকাতা বিমানবন্দর আজ বিকেল ৩টে থেকে আগামী কাল সকাল ৮টা পর্যন্ত কলকাতা থেকে বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে।
ঝড়ের দাপটে মেট্রো পরিষেবা কোথাও বিপর্যস্ত হলে পরিস্থিতি সামলাতে ২৪টি স্টেশনে এক জন করে আধিকারিককে ‘সুপারভাইজার’ হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
পুরী সংলগ্ন গোপালপুরে (গঞ্জামের ‘গোপালপুর অন সি’ নয়) এটি আছড়ে পড়েছে। এর পরে তটরেখা ধরে সেটি পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করে দক্ষিণবঙ্গের উপর দিয়ে বাংলাদেশের দিকে চলে যাওয়ার কথা।