শক্ত হাতে রাশ ধরে সফল ক্যাপ্টেন

পঞ্জাব সরকারের এক আমলার মতে, ঘটনার ১৫ দিন আগে থেকে মুখ্যমন্ত্রী নিজে বৈঠক করেছেন গোটা নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে। সরাসরি কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৪৯
Share:

তল্লাশি: ডেরা সচ্চা সৌদা প্রধান রাম রহিম সিংহের ভক্তরা ডেরা ছেড়ে যাচ্ছেন। রবিবার সিরসায়। ছবি: পিটিআই।

রাত পোহালেই ফের পরীক্ষা। প্রথম পরীক্ষায় বিজেপির হরিয়ানা সরকার যখন একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছে, তখন পাশের কংগ্রেস শাসিত রাজ্য পঞ্জাবের মুখে সাফল্যের হাসি। সৌজন্যে ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ।

Advertisement

ডেরা সচ্চা সৌদার প্রধান গুরমিত রাম রহিমের ভক্তরা যেমন হরিয়ানায় আছেন, তেমনই পঞ্জাবেও তাঁদের প্রভাব কম নয়। সেই ভক্তদের দাপটে হরিয়ানায় আগুন জ্বলেছে, প্রাণ হারিয়েছেন ৩৮ জন। কিন্তু পঞ্জাব সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে শক্ত হাতে। খোদ আদালতই যে কারণে দুই রাজ্যের ফারাক তুলে বিঁধেছে হরিয়ানা সরকারকে।

কিন্তু কী করে এই সাফল্য আনলেন ক্যাপ্টেন?

Advertisement

পঞ্জাব সরকারের এক আমলার মতে, ঘটনার ১৫ দিন আগে থেকে মুখ্যমন্ত্রী নিজে বৈঠক করেছেন গোটা নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে। সরাসরি কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই হরিয়ানা সরকারের গোয়েন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। রায়ের আগে ও পরে খোদ মুখ্যমন্ত্রী পথে নেমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেছেন। এই সক্রিয়তার জন্যই হরিয়ানার ঘটনা ঘটেনি লাগোয়া পঞ্জাবে। আগামিকালের জন্যও সব রকম আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দিল্লিতে সনিয়া গাঁধীকেও ফোন করে ক্যাপ্টেন জানিয়েছেন, তাঁর রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে দেবেন না কোনও ভাবে।

আরও পড়ুন:
‘বাবা’র কাছে এসে বৌ হারালেন কমলেশ

তোপের পরে হিংসা নিয়ে সরব প্রধানমন্ত্রী

এই কাজটিই হরিয়ানার মনোহর লাল খট্টার সরকার করতে পারল না কেন?

কংগ্রেসের অভিযোগ, আসলে ভোটের জন্যই প্রশাসনে ঢিলে দিয়েছিলেন খট্টার। এখন অফিসারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন। তা না হলে একজন ডিসিপি হয়ে অশোক কুমার জানবেন না, ১৪৪ ধারা কী ভাবে প্রয়োগ করতে হয়? ১৪৪ ধারা প্রয়োগ হয় ‘সিআরপিসি’র অধীনে। আর ডিসিপি প্রয়োগ করেছিলেন ‘আইপিসি’র অধীনে। এটিকে ‘ক্লারিক্যাল’ ভুল বলে আদালতে দাবি করে ধমক খেয়েছে হরিয়ানা সরকার। সেই ডিসিপিকেই সাসপেন্ড করা হয়েছে।

মুখ পুড়িয়ে বিজেপি এখন বলছে, পঞ্জাবেও হিংসা হয়েছে, কিন্তু সেটা সংবাদমাধ্যমের নজরে পড়েনি! তাদের দাবি, ৬৪টি এলাকায় গন্ডগোল হয়েছে। মানসায় আয়কর দফতরে আগুন জ্বালানো হয়েছে, মোগা স্টেশন পোড়ানো হয়েছে, সাঙ্গরুরে বিদ্যুৎ স্টেশনে আগুন লাগানো হয়েছে, ভাটিন্ডায় হিংসা হয়েছে। সেই সঙ্গেই বিজেপির বক্তব্য, রাম রহিম প্রশ্নে কংগ্রেস বিজেপির দিকে আঙুল তুলছে। অথচ বাজপেয়ী আমলে রাম রহিমের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া তদন্ত দীর্ঘ দিন ঝুলিয়ে রেখেছিল কংগ্রেসই। বিজেপি জমানাতেই জেল হল রাম রহিমের। বিজেপির দাবি, রাম রহিমের তদন্তকারী অফিসার মুলিঞ্জা নায়ারণ ডিআইজি পদ থেকে অবসর নিয়েছেন। মুলিঞ্জা বলেছেন, মামলা বন্ধ করার নির্দেশ ছিল তাঁর উপর। রাম রহিমের জেড প্লাস নিরাপত্তাও কংগ্রেস আমলে দেওয়া। এত দিন কংগ্রেসও রাজনৈতিক ভাবে তাঁর সমর্থন পেয়ে এসেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement