বনে-জঙ্গলে: ১২ অগস্ট রাত ৯টায় টিভি সিরিজ ‘ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড’-এ বেয়ার গ্রিলসের সঙ্গী এ বার নরেন্দ্র মোদী। পুলওয়ামা হামলার দিনে এই সিরিজেরই শুটিং করছিলেন প্রধানমন্ত্রী. ছবি: টুইটার
উত্তরাখণ্ডের করবেট জাতীয় অভয়ারণ্যের খরস্রোতা নদীর বুকে ভেলায় ভেসে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী। কাট...
গভীর জঙ্গলের আলোছায়া পথে হাঁটতে হাঁটতে প্রধানমন্ত্রী বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের গুরুত্ব নিয়ে গম্ভীর আলোচনা করছেন সঞ্চালক বেয়ার গ্রিলসের সঙ্গে...
‘ডিসকভারি’ চ্যানেলের জনপ্রিয় তথ্যচিত্র ‘ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড’-এর এই প্রোমো আজ সামনে আসতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিরোধীরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, গত পাঁচ বছরে উন্নয়নমূলক কাজের যুক্তি দিয়ে প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ গাছ কাটার অনুমোদন দিয়েছে মোদীর সরকার। মোদীর গর্বের মুম্বই-আমদাবাদ বুলেট ট্রেনের লাইন বসাতেও কাটা পড়তে বসেছে ৫৪ হাজার ম্যানগ্রোভ। ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামার জঙ্গিহানায় ৪০ জন আধাসেনা নিহত হওয়ার
সময়ে এই তথ্যচিত্রের শুটিংয়েই ব্যস্ত ছিলেন মোদী।
‘ডিসকভারি’ চ্যানেলের তরফে জানানো হয়েছে, করবেট অভয়ারণ্যে শুটিং হওয়া এই বিশেষ পর্বটিতে পরিবেশ রক্ষা নিয়ে মানুষের সচেতন হওয়ার গুরুত্বের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। মোদী সেখানে বলেছেন, ‘‘বছরের পর বছর আমি প্রকৃতির কোলে বাস করেছি। পাহাড়-জঙ্গলের সংস্পর্শে এসেছি। সেই সব দিনগুলোর গভীর প্রভাব রয়েছে আমার জীবনে। ফলে রাজনীতির বাইরে এমন একটা বিষয়ে অংশ নেওয়ার সুযোগ যখন এল, ছাড়িনি।’’ ১২ অগস্ট রাত ন’টায় সম্প্রচারিত হবে এই পর্বটি। বেয়ার গ্রিলস নিজের টুইটার হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘‘১৮০টি দেশের মানুষ মোদীর এই অজানা দিকটি জানতে পারবেন। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের উপযোগিতা ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আলোকপাত করবেন মোদী।’’
পৌনে এক মিনিটের প্রোমোটিতে দেখা গিয়েছে, হাতে ফ্লাস্ক নিয়ে ব্রিটিশ অভিযাত্রী গ্রিলসের সঙ্গে রাফ্টিংয়ের জন্য তৈরি হচ্ছেন ৬৮ বছরের মোদী। গ্রিলস তাঁকে বলছেন, ‘‘আপনি ভারতের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক। আমার কাজ আপনাকে রক্ষা করা।’’
আরও পড়ুন: গ্রামে রাত কাটাতে নির্দেশ, ‘দিদিকে বলো’ দাওয়াই মমতার
ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসতেই এ দিন ফের পুলওয়ামার প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন বিরোধীরা। ১৪ ফেব্রুয়ারি লস্কর জঙ্গিদের সেই হামলার সপ্তাহ খানেক পরে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন, ‘‘৪০ জন জওয়ানের মৃত্যুতে গোটা দেশ যখন শোকার্ত, আমাদের প্রধানমন্ত্রী তখন করবেটের জঙ্গলে নৌকা চেপে ঘুরে ঘুরে কুমির দেখছিলেন!’’ সুরজেওয়ালার দাবি ছিল, ওই দিন সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত শুটিং চলেছিল। পৌনে সাতটায় মোদী চা ও খাবার খান। অর্থাৎ, হামলার চার ঘণ্টা পরেও মোদী ব্যস্ত ছিলেন তাঁর নিজের প্রচার, ফটোশুট, খোশগল্প নিয়ে! প্রধানমন্ত্রীর দফতর ব্যাখ্যা দিয়েছিল, মোদী সে দিন উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপুরে লোকসভা ভোটের প্রচারে যাচ্ছিলেন। বৃষ্টিতে আটকে পড়ে ৩ ঘণ্টা কাটান করবেট অভয়ারণ্যে। কয়েকটি সূত্রের আবার দাবি, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালই হামলার খবর মোদীকে সময় মতো দেননি।