ফের কোপ লেনিনের মূর্তিতে। সাব্রুমে মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।
পরিবর্তন হয়েছে ২৫ বছর পরে। জমানা বদলের সঙ্গে সঙ্গেই গোটা ত্রিপুরা জুড়ে সন্ত্রাসের রাজত্ব শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করে এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপ চাইল সিপিএম। দক্ষিণ ত্রিপুরার বিলোনিয়ায় বুলডোজার দিয়ে লেনিনের মূর্তি ভাঙার ঘটনা নিয়ে সারা দেশে হইচই হচ্ছে। কিন্তু তা ছাড়াও উত্তর-পূর্বের এই ছোট্ট রাজ্যের জেলায় জেলায় গেরুয়া তাণ্ডব চলছে বলে বামেদের অভিযোগ। আক্রান্ত ত্রিপুরার বামপন্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে সহমর্মিতার প্রস্তাব পাশ হয়েছে বাংলায় সিপিএমের ২৫তম রাজ্য সম্মেলনের আসর থেকেও।
দলের পলিটব্যুরো সদস্য ও সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম মঙ্গলবার চিঠি পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। সিপিএমের একটি প্রতিনিধিদলও গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। চিঠিতে সিপিএমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ফল বেরোনোর পরে ত্রিপুরায় সোমবার বিকাল পর্যন্ত ৫১৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। হামলা হয়েছে ১৫৩৯টি বাড়িতে, আগুন লাগানো হয়েছে ১৯৬টি বাড়িতে। সিপিএমের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর হয়েছে ১৩৪টি এবং দখল হয়েছে ২০৮টি। পরিবহণ, অসংগঠিত ক্ষেত্র-সহ নানা ইউনিয়নের কার্যালয় রাতারাতি ঝান্ডা বদলে কব্জা করে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ না করলে পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হবে বলে চিঠিতে জানানো হয়েছে।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সরব হওয়ার পরে এ দিনই অবশ্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কথা বলেছেন ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায়ের সঙ্গে। সিপিএমের বক্তব্য, নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগে পর্যন্ত প্রশাসনিক স্তরে যে শূন্যতা আছে, তার সুযোগ নিচ্ছে হামলাকারীরা। রাজ্যপালের কাছ থেকে নিয়োগপত্র নিয়ে বেরোনোর পরে হিংসা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে রাজ্যের ভাবী মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব বলেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনা আমরা সমর্থন করি না। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই এই নিয়ে যা বলার, বলেছেন। আমি আর কোনও মন্তব্য করব না।’’ সন্ধ্যায় ত্রিপুরার মুখ্যসচিব এবং ডিজি বিপ্লবের বাড়ি গিয়েছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ে তখনও আলোচনা হয়েছে।
ত্রিপুরায় ১২ মার্চ চড়িলাম বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচন। সেই কেন্দ্রের প্রার্থী জিষ্ণু দেববর্মাকে এ দিন উপ-মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছে বিজেপি। এর পরে ওই আসন জিততে বিজেপি আরও মরিয়া হবে বলে সিপিএমের আশঙ্কা। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দাশ বলেন, ‘‘ওখানে আমাদের দলীয় কার্যালয় তালাবন্ধ করে রেখে দিয়েছে! নির্বাচনের কাজ সেখানে শুরুই করা যাচ্ছে না।’’