প্রতীকী ছবি।
বিজেপি ও তৃণমূলের মোকাবিলায় লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা দরকার, এই লক্ষ্যে দুই শরিক দলকে পাশে পেল সিপিএম। তবে আসন সমঝোতার প্রক্রিয়া এর পরে কী ভাবে এগোবে, সেই বল কংগ্রেসের কোর্টেই ছেড়ে রাখলেন বাম নেতৃত্ব। কারণ, সিপিএমের গত বারের জেতা রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসন তাঁরা ছেড়ে দেবেন না বলেই আনুষ্ঠানিক ভাবে সিদ্ধান্ত হল চার বাম দলের রাজ্য নেতৃত্বের বৈঠকে।
আলিমুদ্দিনে সোমবার সিপিএম, সিপিআই, আরএসপি এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের বৈঠকে প্রথম তিন দল একমত হয়েছে, শর্তসাপেক্ষে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা হতে পারে। তবে আলাদা করে কোনও শরিক দল আর কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনায় যাবে না। বরং, বামফ্রন্টের তরফেই কংগ্রেসের সঙ্গে কথা হবে। সমঝোতা চূড়ান্ত করার আগে কংগ্রেসের কাছ থেকে পরিষ্কার আশ্বাস নিতে হবে যে, শেষ মুহূর্তে তারা আবার তৃণমূলের সঙ্গে কোনও রফায় চলে যাবে না! একই দিনে তৃণমূলের বৈঠকে অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্টই বলে দিয়েছেন, ‘‘আমি যে ৪২-এ ৪২ আসনের কথা বলছি, সেটা শুধু কথার কথা নয়!’’
শরিকদের সঙ্গে আলোচনায় এ দিন বিমান বসু ও রবীন দেব থাকলেও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ছিলেন না। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘বামফ্রন্টের অন্দরে বিশেষ সমস্যা নেই। যা আছে, আলোচনায় মিটিয়ে ফেলা সম্ভব। তবে রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদের দাবি ছেড়ে কংগ্রেস সমঝোতায় আসবে কি না, তা তাদেরই ঠিক করতে হবে।’’ বাম নেতৃত্বের অবস্থান জেনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র জানিয়েছেন, দলে আলোচনা করে তাঁরাও অবস্থান জানাবেন। কংগ্রেসের অন্দরের জট ও বামেদের বক্তব্য— গোটা বিষয়টিই জানানো হয়েছে বাংলার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা গৌরব গগৈকে। আমদাবাদে আজ, মঙ্গলবার এআইসিসি-র বৈঠক রয়েছে। পরদিন কলকাতায় বিধান ভবনে বৈঠকে বসবে প্রদেশ কংগ্রেসের নির্বাচন কমিটি।
শরিকদের মধ্যে ফ ব অবশ্য তাদের তিন আসনের প্রার্থীর নাম এ দিনই বিমানবাবুর কাছে জমা দিয়েছে। দলের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘আমরা কংগ্রেসের সঙ্গে বোঝাপড়া চাই না। তাই আলোচনাতেও যাব না।’’ বৈঠকের পরে আরএসপি-র সাধারণ সম্পাদক ক্ষিতি গোস্বামী বলেন, ‘‘আগের অভিজ্ঞতা থেকে কংগ্রেসকে পুরোপুরি বিশ্বাস করা যায় না। তারা কী চায়, ভাল করে বুঝে নিয়েই পা ফেলতে হবে।’’ সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘আসন সমঝোতার বিষয়টি তিন দলের মধ্যে মোটামুটি একটা নিষ্পত্তি হয়েছে।’’
বাংলায় যখন বোঝাপড়ার আলোচনা, সেই সময়েই ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক গৌতম দাশ অবশ্য জানিয়েছেন, সে রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁদের কোনও সমঝোতা হচ্ছে না। ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সিদ্ধান্ত জানিয়ে গৌতমবাবু বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যের দু’টি আসনেই প্রার্থী দেব।’’