আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পরাস্ত করতে হবে। সেই লক্ষ্যে রাজ্যওয়াড়ি পরিস্থিতি বিচার করে নির্বাচনী কৌশল ঠিক করার ভার সংশ্লিষ্ট রাজ্য নেতৃত্বের উপরেই ছেড়ে রাখছে সিপিএম এবং বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। দিল্লিতে রবিবার শেষ হওয়া সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক এবং কলকাতায় সাঙ্গ হওয়া ফ ব-র অষ্টাদশ পার্টি কংগ্রেসে রাজ্যভিত্তিক আলাদা পরিস্থিতির কথাই এসেছে।
পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ফলাফলের প্রাথমিক পর্যালোচনা করে সিপিএমের মত, বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটেছে ভোটের বাক্সে। লোকসভা ভোটে বিজেপি-বিরোধী যাবতীয় ক্ষোভ যাতে ভোটের বাক্সে একত্রিত হয়, তার জন্য চেষ্টা করার কথা বলেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। বিজেপির সরকারকে পরাস্ত করা এবং ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে নিয়ে বিকল্প সরকার গড়ার প্রয়াস— লোকসভা ভোটের আগে এই লক্ষ্যেই তারা এগোতে চায়। আবার একই সঙ্গে বাংলা, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যের শাসক দলকে হারানোর কথাও বলছে তারা। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘আগামী ৮-৯ জানুয়ারি দেশ জুড়়ে দু’দিনের সাধারণ ধর্মঘট পুরোপুরি মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই ধর্মঘট ভাঙতে সক্রিয় হন কি না, দেখা যাক! তৃণমূল তো বলছে তারা বিজেপিকে হারাতে চায়। এই ধর্মঘটেই তাদের অবস্থান আবার স্পষ্ট হবে।’’
কলকাতার রামলীলা ময়দানে ফ ব-র অষ্টাদশ পার্টি কংগ্রেসের শেষ দিনে ফের দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন দেবব্রত বিশ্বাস। যিনি ১৯৯৭ সাল থেকে ওই পদে আছেন। তৈরি হয়েছে ৫৮ জনের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি। দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীতে নতুন এসেছেন চার জন। দেবব্রতবাবুরা কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার বিরোধী হলেও পার্টি কংগ্রেসে পাশ হওয়া একটি রাজনৈতিক প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সাম্প্রদায়িক শক্তির মোকাবিলায় বাম, ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক সব শক্তিকে সংহত করার চেষ্টা করবে ফ ব। নির্বাচনী কৌশলের ব্যাপারে রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা ও সম্মতিসাপেক্ষে। দলের এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, ‘‘বাংলায় আমরা দলের অস্তিত্ব বাঁচাতে কংগ্রেসের সঙ্গে না যাওয়ার কথা বলছি। কিন্তু কেরলে আবার কংগ্রেসের হাত ধরেই ভোটে লড়তে হবে! তাই সব পথ খোলা রাখা ছাড়া উপায় কী?’’