প্রতীকী চিত্র।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মাথা তুলতেই টিকা পাওয়া নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে দেশ জুড়ে। চেয়েও প্রতিষেধক পাচ্ছে না রাজ্যগুলি। কারও ভাবনা সময়ে দ্বিতীয় ডোজ় মিলবে তো? এরই মধ্যে কোভিডের ওষুধ নিয়েও দিশাহীন বহু মানুষ এখন রেমডেসিভিয়ার জোগাড়ে হামলে পড়ছেন। কেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্তাই মানছেন, হঠাৎ এই ওষুধের জন্য পাড়ার দোকানে লাইন দেখে মানুষজনের উদ্বেগ বাড়ছে আরও। বিতর্ক বাড়িয়েছে, গুজরাতে বিজেপি নেতার রেমডেসিভিয়ার বিলির ঘোষণা।
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র আজ ঘোষণা করল, হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ও শ্বাসকষ্ট কমাতে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে, শুধু এমন করোনা সংক্রমিতদের ক্ষেত্রেই রেমডেসিভিয়ার ওষুধ ব্যবহার করা উচিত। বাড়িতে চিকিৎসাধীন, উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে রেমডেসিভিয়ারের কোনও প্রয়োজন নেই। দেশের চিকিৎসকদেরও রেমডেসিভিয়ার ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও বিবেচক হওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। একই বক্তব্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তাদেরও।
দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ বাড়তে শুরু করার পরেই দেশ জুড়ে রেমডেসিভিয়ার কেনার জন্য ওষুধের দোকানে মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করছেন। সংক্রমিতের সংখ্যা এক লাফে বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে জোগানে ঘাটতি। যার সুযোগ নিয়ে তিন-চার গুণ দামে রেমডেসিভিয়ার বিক্রি হচ্ছে বলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অভিযোগ জমা পড়ছে কেন্দ্রের কাছে। গুজরাতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সি আর পাটিল রোজ পাঁচ হাজার রেমডেসিভির বিতরণের কথা ঘোষণা করায় আজ তাঁর বাড়ির সামনে প্রচুর মানুষ ভিড় করেন। প্রশ্ন উঠেছে, দেশে যখন আম আদমি রেমডেসিভিয়ার পাচ্ছে না, তখন ওই বিজেপি নেতা কী ভাবে প্রতিদিন পাঁচ হাজার করে ওই ওষুধ বিলি করার ঘোষণা করতে পারেন? এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি সে রাজ্যের বিজেপি সরকার। বিষয়টি নিয়ে নীরব কেন্দ্রও। স্পষ্টতই বিষয়টি নেয়ে অস্বস্তিতে বিজেপি নেতৃত্ব ও সরকার।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ সংস্থার ডিজি বলরাম ভার্গব অবশ্য বলেন, দেশে সাতটি সংস্থা ওই ওষুধ তৈরি করে। দেশে রেমডেসিভিয়ারের কোনও ঘাটতি নেই। তবে অহেতুক যাতে চাহিদা বেড়ে না-যায় সে বিষয়ে জোর দিতে চাইছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। মন্ত্রকের সাপ্তাহিক সাংবাদিক বৈঠকে এ নিয়ে আজ মুখ খোলেন নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ভি কে পল। বলেন, “এই ওষুধ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন এবং শ্বাসকষ্টের কারণে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে, একমাত্র তাঁদেরই কাজে লাগার কথা। মৃদু উপসর্গ বা উপসর্গহীন সংক্রমিত, যাঁরা বাড়িতে রয়েছেন, তাঁদের এই ওষুধ লাগার কথা নয়। তা ছাড়া, এই ইঞ্জেকশনটি ইন্ট্রাভেনাস। তাই হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীর উপস্থিতিতেই ওই ওষুধ নেওয়া উচিত রোগীর।” সংক্রমণের প্রথম দফাতেই রেমডেসিভিয়ারকে করোনা চিকিৎসায় ছাড় দিয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রক।