কেন্দ্রীয় সরকারের অবসরপ্রাপ্ত কোনও কর্মীর মৃত্যু হলে তাঁর বিবাহবিচ্ছিন্না বা বিধবা মেয়েকে ‘ফ্যামিলি পেনশন’ বা পারিবারিক পেনশন দেওয়া হবে না বলে সেপ্টেম্বরে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের কলকাতা শাখা (ক্যাট) কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, কেন্দ্রের ওই বিজ্ঞপ্তি কেন অসাংবিধানিক নয়, চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা পেশ করে তা জানাতে হবে।
অঞ্জনা রায় নামে বিরাটির এক বিবাহবিচ্ছিন্না মহিলা মার্চে ক্যাট-এ মামলা দায়ের করে জানান, তাঁর বাবা পূর্ব রেলে কাজ করতেন। ১৯৮৭ সালে বাবার মৃত্যুর পরে তাঁর মা পারিবারিক পেনশন পাচ্ছিলেন। তাঁর মা ১৯৯২ সালে মারা যান। ২০০২ সালে অঞ্জনাদেবীর বিবাহবিচ্ছেদ হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের পুরনো নিয়ম অনুযায়ী তিনি বাবা-মায়ের মৃত্যুর পরে পারিবারিক পেনশনের জন্য আবেদন জানান। ২০১২ সাল থেকে কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে ওই পেনশন মঞ্জুর করে। তিনি ওই বছর থেকে সেই পেনশন পাচ্ছিলেন।
কিন্তু পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের ম্যানেজারের কার্যালয় থেকে চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি ওই মহিলাকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, তাঁকে আর পারিবারিক পেনশন দেওয়া হবে না। ক্যাট-এর কাছে অঞ্জনাদেবীর আবেদন, কেন্দ্র যাতে ফের তাঁকে পারিবারিক পেনশন দেয়, সেই ব্যবস্থা করা হোক।
অঞ্জনাদেবীর আইনজীবী কল্যাণ সরকার এ দিন জানান, ২০০৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, অবসরপ্রাপ্ত কোনও কেন্দ্রীয় কর্মীর অবিবাহিত বা বিবাহবিচ্ছিন্না অথবা বিধবা মেয়ে তাঁর বাবা-মায়ের মৃত্যুর পরে ফ্যামিলি পেনশন পাবেন। তার ভিত্তিতে ওই পেনশন পেতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানান তাঁর মক্কেল। কিন্তু কেন্দ্র গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর হঠাৎ নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, এর পরে কোনও কেন্দ্রীয় অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর মৃত্যু হলে তাঁর অবিবাহিত বা বিবাহবিচ্ছিন্না বা বিধবা কন্যা ফ্যামিলি পেনশন পাবেন না। সেই বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতেই পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের ম্যানেজারের কার্যালয় অঞ্জনাদেবীর পেনশন বন্ধ করে দেয়।