প্রতীকী ছবি
অতিমারির ফলে বাবা-মার এক জন বা দু’জনকেই হারানো নাবালকদের পরিস্থিতি বেদনাদায়ক বলে মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। তবে ওই শিশুদের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির তৈরি প্রকল্প নিয়েও কোর্ট সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছে বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর বেঞ্চ।
অতিমারির ফলে যে সব নাবালক বাবা-মার এক জন বা দু’জনকেই হারিয়েছে তাদের নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা শুরু করেছিল শীর্ষ আদালত। আজ সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতিরা বলেন, ‘‘কোভিডের ধ্বংসলীলার ফলে বহু জীবন নষ্ট হয়েছে। বিশেষত অনেক শিশু অনেক কম বয়সে বাবা-মাকে হারিয়েছে। এত শিশুর বেঁচে থাকাটাই প্রশ্নের মুখে। এই বিষয়টি অত্যন্ত বেদনাদায়ক।’’
বেঞ্চের মতে, যে সব নাবালকের সাহায্য প্রয়োজন তাদের চিহ্নিত করার কাজ করছে শিশু কল্যাণ কমিটি। সেই কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। সরকারি প্রকল্পের সুবিধে যাতে দ্রুত তাদের কাছে পৌঁছয় তা-ও নিশ্চিত করতে হবে। বিচারপতিরা জানিয়েছেন, সব শিশুর বিনা মূল্যে প্রাথমিক শিক্ষা পাওয়ার সাংবিধানিক অধিকার আছে। সেই শিক্ষা যাতে তারা পায় তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বেঞ্চ জানিয়েছে, এই শিশুদের শিক্ষালাভের প্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার গুরুত্ব যে রাষ্ট্র বোঝে তা নিয়ে আদালতের কোনও সন্দেহ নেই।
অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য ভাট্টি জানান, কোভিডের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা ‘পিএম কেয়ার্স ফর চিলড্রেন’ তহবিলের অধীনে করতে চায় কেন্দ্র। এই সুবিধে পাওয়ার অধিকারী ২,৬০০ জন শিশুর নাম নথিবদ্ধ করা হয়েছে। ৪১৮টি আবেদন মঞ্জুর করেছেন সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকেরা। বাকিদের আবেদন মঞ্জুর করার প্রক্রিয়া শেষ করতে জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছে বেঞ্চ। সেই সঙ্গে আদালত জানিয়েছে, যে ২৬০০ শিশুর নাম নথিবদ্ধ হয়েছে তাদের স্কুল ফি ও অন্য খরচের ভার প্রয়োজনে ভারত সরকারকে বহন করতে হবে।
বিচারপতিরা জানান, অতিমারির ফলে যে সব শিশু বাবা-মার এক জন বা দু’জনকে হারিয়েছে তাদের ফি মকুব করা নিয়ে রাজ্যগুলিকে বেসরকারি স্কুলগুলির সঙ্গে কথা বলতে হবে। যদি স্কুলগুলি ফি মকুব করতে রাজি না হয় তাহলে রাজ্যগুলিকে ফি মিটিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে। শিশু সুরক্ষা কমিটি প্রয়োজনে যে সব শিশুর সাহায্যের প্রয়োজন নেই তাদেরও চিহ্নিত করতে পারে।