ছবি: সংগৃহীত।
বছরখানেক আগেই প্রকল্পটির কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার— ‘অ্যাডপ্ট আ হেরিটেজ’। তাজমহল থেকে কাংড়া ফোর্ট, তিমবাং থেকে হরিদ্বারের সতীঘাট, কোণার্কের সূর্যমন্দির থেকে লালকেল্লা— এমনই একশো ‘হেরিটেজ স্থাপত্য’কে দত্তক দেওয়ার প্রকল্প। এ বার সেই প্রকল্পে লালকেল্লাকে দত্তক নিল ডালমিয়া ভারত গ্রুপ।
আগামী পাঁচ বছর ঐতিহাসিক এই স্থাপত্যের যাবতীয় দায়িত্ব ওই গোষ্ঠীর হাতেই থাকবে। এ জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে ২৫ কোটি টাকা দিতে হয়েছে। কোনও কর্পোরেট গ্রুপ এই প্রথম কোনও হেরিটে়জ স্থাপত্যকে দত্তক নিল। ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স এবং জিএমআর গ্রুপের সঙ্গে লড়াই করে ডালমিয়া ভারত গ্রুপ এই বরাত পেয়েছে। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, আগামী মাস থেকেই লালকেল্লায় তারা প্রাথমিক পর্যায়ের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু করবে। করা হবে রাতে আলোক প্রদর্শনীর ব্যবস্থাও। ১৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লালকেল্লা থেকে দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। তার আগেই নিরাপত্তা সংস্থার হাতে লালকেল্লাকে তুলে দিতে হবে। তার পর ফের তারা কাজ শুরু করবে।
লালকেল্লাকে দত্তক নেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন টুইটারে লিখেছেন, ‘‘লালকেল্লা হল ভারতের ঐতিহ্যের প্রতীক। সরকার কেন তার দায়িত্ব নিতে পারবে না? প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসে এখান থেকে দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। ইতিহাসের এটা একটা কালো দিন।’’
সপ্তদশ শতকে দিল্লিতে মুঘল সম্রাট শাহজাহান লালকেল্লা তৈরি করেন। সম্প্রতি ডালমিয়া গ্রুপের সঙ্গে একটি মউ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে পর্যটন ও সংস্কৃতি মন্ত্রক এবং আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার। লালকেল্লাকে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে নিয়ে আসতে বেশ কিছু পরিকল্পনা করেছে ওই গোষ্ঠী। শুরু হবে আলোক প্রদর্শনী। স্থাপত্যের বিভিন্ন জায়গায় লেখা হবে লালকেল্লার ইতিহাস, শৌচাগারের উন্নতি, পর্যটকদের ঘুরে দেখার জন্য থাকবে কেল্লার বিভিন্ন অংশের ম্যাপ, ব্যাটারিচালিত গাড়ি, কফি শপ ইত্যাদি।
এ জন্য পর্যটকদের কাছ থেকে টিকিটের বিনিময়ে টাকা তুলতে পারবে ডালমিয়া গোষ্ঠী। সেই টাকা কেল্লার উন্নতিতে খরচ করতে হবে। লালকেল্লার বিভিন্ন জায়গায় হোর্ডিং বা ব্যানার দিয়ে তারা নিজেদের কোম্পানির প্রচার করতে পারবে।