গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
শঙ্কা বাড়াচ্ছে দেশে করোনা সংক্রমণের গতি। বৃহস্পতিবার সংক্রমণ ও মৃত্যু-- দু'টি ক্ষেত্রেই নতুন রেকর্ড তৈরি হল। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৩৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ন’হাজার ৯৯৬ জন। সব মিলিয়ে সারা দেশের আক্রান্তের সংখ্যা এখন দু’লক্ষ ৮৬ হাজার ৫৭৯। সেই হিসেবে গোটা দুনিয়ায় ভারত এখন পঞ্চম স্থানে। তবে যে গতিতে রোগী বাড়ছে, তাতে কয়েক দিনের মধ্যে মোট সংক্রমণের নিরিখে চতুর্থ স্থানে থাকা ব্রিটেনকে ছাপিয়ে যেতে পারে এই দেশ। এমনটাই মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ব্রিটেনে সংক্রমিতের সংখ্যা এখন ২.৯১ লক্ষ।
মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি আগে থেকেই উদ্বেগজনক ছিল। সেখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯৪ হাজার। মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৪৩৮ জনের। কিন্তু আশঙ্কা বাড়াচ্ছে দিল্লির পরিস্থিতি। দেশের রাজধানীতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩২ হাজার ৮১০ জন। তামিলনাড়ুতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬ হাজার ৮৪১ জন। সারা দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে আট হাজার ১০২ জনের। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানাচ্ছে, ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ কোমর্বিডিটির কারণে মারা গিয়েছেন। সারা দেশে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। দেশে এখন সক্রিয় করোনা রোগী এক লক্ষ ৩৭ হাজার ৪৪৮ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন এক লক্ষ ৪১ হাজার ২৯ জন। স্বাস্থ্য মন্ত্রক দাবি করেছে, আগামী দিনে সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা বাড়বে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানাচ্ছে, এ রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ন’হাজার ৩২৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ৪৩২ জনের। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের বুধবারের বুলেটিন অনুযায়ী, সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪৩২ জনের। আরও বলা হয়েছে, মৃতদের মধ্যে ২৮৮ জনের শরীরে কোমর্বিডিটির লক্ষণ ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪৩ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আরও পড়ুন: শরীরে তৈরি হচ্ছে করোনার অ্যান্টিবডি, দেশে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা এখন বেশি
দেশের ৭০টি জেলায় সমীক্ষা চালিয়ে আইসিএমআর জানিয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলির মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ সংক্রমিত হয়ে সেরেও উঠেছেন। তাঁদের রক্তে অ্যান্টিবডি মিলেছে। এ ভাবেই জনগোষ্ঠীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠতে শুরু করলে কন্টেনমেন্ট এলাকায় নতুন সংক্রমণের হার কমবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনও জনগোষ্ঠীর ৬০ শতাংশের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে গেলে ভাইরাস নতুন করে ছড়াতে পারে না।
আরও পড়ুন: আমি কিন্তু বলিনি: করোনা-এক্সপ্রেস বিতর্কে মুখ্যমন্ত্রী
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)