লকডাউন: হেঁটেই বাড়ি ফেরা। ছবি: পিটিআই।
লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির খবর ভিত্তিহীন বলে জানাল কেন্দ্র। কিন্তু তাতেও মাথা তুলল এক গুচ্ছ প্রশ্ন।
সোমবার কেন্দ্রের তরফে টুইট করা হয়, “২১ দিনের লকডাউন শেষ হলেই সরকার তার মেয়াদ বাড়াবে বলে গুজব ছড়াচ্ছে। এমন খবর চোখে পড়ছে সংবাদমাধ্যমের একাংশেও। কিন্তু এই সমস্ত খবর এবং গুজব অস্বীকার করেছেন ক্যাবিনেট সচিব। তিনি জানিয়েছেন, এগুলি ভিত্তিহীন।” কিন্তু তা দেখে অনেকের প্রশ্ন, লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির সম্ভাবনাকেও কি পুরোপুরি নাকচ করে দিলেন সচিব? ভারত-সহ গোটা বিশ্বে যখন করোনা-আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার লেখচিত্র প্রতি দিন বদলে যাচ্ছে, সেখানে আরও দু’সপ্তাহ পরে ঘরবন্দিত্বের মেয়াদ না-বাড়ানোর কথা কি এখন থেকে হলফ করে বলতে পারেন তিনি?
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল বলেন, “ক্যাবিনেট সচিব ইতিমধ্যেই অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। এ নিয়ে আর কিছু বলব না। তবে এ কথা ঠিক যে, আগের তুলনায় এখন কিছুটা হলেও ভাল অবস্থায় রয়েছি আমরা।
আগামী দু’সপ্তাহ আমাদের সকলের পক্ষে অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই সময়ে লকডাউনের নিয়ম মেনে চলা, সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা কিংবা করোনা আক্রান্তদের চিহ্নিত করে চিকিৎসার বন্দোবস্তের বিষয়ে কোনও ঢিলেমি নয়।”
সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, লকডাউনের মেয়াদ যত লম্বা হবে, সাধারণ মানুষের রুজি-রুটি তথা দেশের অর্থনীতি যে তত বেশি ধাক্কা খাবে, কেন্দ্র সে সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। কিন্তু বিশেষ পরিস্থিতিতে এই ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। তাই আগামী ১৫ দিনে পরিস্থিতি যে দিকে গড়াবে, সেই অনুসারে ব্যবস্থা নেবে তারা।
লকডাউন শুরুর পর থেকেই সারা দেশে হাজারো সমস্যার মুখে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। দিল্লি থেকে কয়েকশো কিলোমিটার হেঁটে নিজের বাড়ি পৌঁছতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ভিন্ রাজ্যের শ্রমিক। দেশের অধিকাংশ মানুষের টানা এত দিনের খাবার এক বারে রেখে দেওয়ার সামর্থ্য নেই। অন্য দিকে, প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি জিনিস কিনছেন তুলনায় স্বচ্ছলরা। জোগানও কম। সব মিলিয়ে বাজার থেকে উধাও অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী। অনেকে বলছেন, এই পরিস্থিতিতে মেয়াদ বৃদ্ধির গুজব ছড়ালে, কালোবাজারি মাথাচাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা। তৈরি হতে পারে অযথা আতঙ্কও। তাই এই সংক্রান্ত গুজবকে যে এখন কেন্দ্র নস্যাৎ করে দেবে, এটাই প্রত্যাশিত।