পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে রওনা ট্রেন। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
দীর্ঘ টানাপড়েনের পর এক হাজার পরিযায়ী শ্রমিককে নিয়ে তেলঙ্গানা থেকে ঝাড়খণ্ডের উদ্দেশে রওনা দিল ট্রেন। আচমকা লকডাউন জারি হওয়ায় চল্লিশ দিন ধরে সেখানে আটকে ছিলেন ওই শ্রমিকরা। দু’দিন আগে তাঁদের যে যার রাজ্যে ফেরার অনুমতি দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। তার পর রাজ্যে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরত পাঠানোর আর্জি নিয়ে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয় ঝাড়খণ্ড ও তেলঙ্গানা সরকার। বৃহস্পতিবার সেই নিয়ে একদফা বৈঠক হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং রেলমন্ত্রকের আধিকারিকদের মধ্যে। শেষমেশ শুক্রবার ভোর পাঁচটা নাগাদ তেলঙ্গানার লিঙ্গমপল্লি থেকে ঝাড়খণ্ডের হাতিয়ার উদ্দেশে রওনা দেয় একটি ট্রেন।
রেলমন্ত্রকের মুখপাত্র আরডি বাজপেয়ী বলেন, ‘‘তেলঙ্গানা সরকারের অনুরোধ মেনে এবং রেলমন্ত্রকের নির্দেশানুযায়ী আজ সকালে লিঙ্গমপল্লি থেকে হাতিয়ার উদ্দেশে একটি বিশেষ ট্রেন রওনা দিয়েছে। ট্রেন ছাড়ার আগে যাত্রীদের পরীক্ষা করা হয়েছে। স্টেশন এবং ট্রেনের মধ্যে যাতে তাঁদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে, ব্যবস্থা করা হয়েছে তারও।’’তবে এই মুহূর্তে ওই একটি ট্রেনই চালানোর অনুমতি মিলেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। রাজ্যগুলির অনুরোধ মেনে আগামী দিনে রেলমন্ত্রক যেমন নির্দেশ দেবে, সেই মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
লিঙ্গমপল্লি থেকে ২৪ কামরার যে ট্রেনটি এ দিন রওনা দিয়েছে, রাত ১১টা নাগাদ সেটি হাতিয়া পৌঁছবে। জল ভরা এবং কর্মী বদলের প্রয়োজন ছাড়া কোনও স্টেশনে দাঁড়াবে না সেটি। প্রতিটি কামরায় ৫৪ জন করে যাত্রী রয়েছেন। যাত্রীরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন কি না, তা দেখতে ট্রেনে মোতায়েন রয়েছে রেল পুলিশ। লিঙ্গমপল্লি থেকে ছাড়ার আগে ট্রেনটিকে জীবাণুমুক্তও করা হয়।
লিঙ্গমপল্লি থেকে ছাড়ছে ট্রেন।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে আশার আলো দেখাচ্ছে প্লাজমা থেরাপি, প্রয়োগ চলবে, জানালেন কেজরী
আরও পড়ুন: করোনার প্রকোপে এপ্রিলে একটিও গাড়ি বিকোয়নি মারুতির
ঝাড়খণ্ড থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা এই মুহূর্তে প্রায় ৯ লক্ষ। এঁদের মধ্যে অধিকাংশই দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে রয়েছেন। দেশের সমস্ত রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে দু’দিন আগেই অনুমতি দেওয়া হয়। তবে বাসে চেপে তাঁদের ফিরতে হবে বলে নির্দেশ দেয় কেন্দ্র, যার বিরুদ্ধে সরব হয় একাধিক রাজ্য। পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে ট্রেনের বন্দোবস্ত করতে হবে বলে পাল্টা দাবি জানায় রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যগুলি। এ নিয়ে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। বিহারের তরফেও পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ট্রেনের বন্দোবস্ত করার অনুরোধ জানানো হয়।