ছবি: পিটিআই।
দেশজোড়া লকডাউনের সময়সীমা কি আরও বাড়ানো হবে? নাকি আগামী রবিবারেই শেষ হবে পূর্বনির্ধারিত লকডাউন? গোটা দেশে করোনা-মোকাবিলায় রেড, অরেঞ্জ, গ্রিন জোনের পরিবর্তে অন্য কোনও ভাবে কি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে হবে কোভিড-১৯ সংক্রমণকে? একাধিক প্রশ্নের আবহেই আগামিকাল, সোমবার সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, আগামিকাল দুপুর ৩টেয় রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত ২৫ মার্চ দেশ জুড়ে লকডাউন শুরু হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে এটিই হবে মোদীর পঞ্চম বৈঠক।
মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কী কী বিষয়ে আলোচনা হতে পারে প্রধানমন্ত্রীর? সূত্রের খবর, মূলত লকডাউন নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা সারবেন মোদী। আগামী ১৭ মে চলতি লকডাউনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে। এর পর তার সময়সীমা বাড়ানো হবে, নাকি তা ধাপে ধাপে তোলা হবে, সে নিয়ে আলোচনার প্রবল সম্ভাবনা আগামিকালের বৈঠকে। পাশাপাশি, করোনা-সংক্রমণ ঠেকাতে কেন্দ্রের নির্দেশিত লাল, কমলা এবং সবুজ এলাকার পরিবর্তে কনটেনমেন্ট জোন অনুযায়ী শিথিলতার মাত্রা বাড়ানো বা কমানোর বিষয়েও আলোচনা হতে পারে। কেন্দ্রের তরফে ইতিমধ্যেই স্পষ্ট ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, গোটা দেশে একধাক্কায় লকডাউন না সরিয়ে সংক্রমণের হার অনুযায়ী ধাপে ধাপে তা উঠানো হবে। এ ছাড়া, দেশের কোন কোন রাজ্যে অথবা এলাকায় লকডাউনের বিধিনিষেধের কড়াকড়ির মাত্রা কেমন হবে, তা নিয়েও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। একাধিক রাজ্যের দাবি, রেড, অরেঞ্জ বা গ্রিন জোনের পরিবর্তে কনটেনমেন্ট এলাকা ধরে বিধিনিষেধের মাত্রা বাড়ানো বা কমানো হোক। অর্থাৎ, করোনা-সংক্রমণের হারের ভিত্তিতেই নির্ধারিত হোক লকডাউনের বিধিনিষেধ। কারণ, কোনও কোনও রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকেরা নিজেদের বাড়িতে ফেরার পর সংশ্লিষ্ট এলাকায় করোনা-সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য সরকারগুলি। ফলে করোনা-সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে জটিলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামিকালের বৈঠকে পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রসঙ্গটিও আলোচ্য হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: লকডাউন শেষে প্রথম সপ্তাহই অগ্নিপরীক্ষা, কর্মী-নিরাপত্তায় জোর কেন্দ্রের
লকডাউনের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ইতিমধ্যেই কৃষি ক্ষেত্র, নির্মাণ-সহ বেশ কিছু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ছাড় দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০ এপ্রিল থেকে ওই ছাড়ের আওতায় এসেছে বহু ক্ষেত্র। কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্যগুলিও বেশ কিছু এলাকায় ছাড় ঘোষণা করেছে। তবে অর্থনীতিকে আরও সচল করতে আর কী কী পন্থা নেওয়া যেতে পারে, বৈঠকে আলোচনা হতে পারে তা নিয়েও। এ ছাড়া, ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়টিও বৈঠকে প্রাধান্য পাবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এই ভাইরাসকে এখনই সহজে নির্মূল করা যাবে না। ফলে সাবধানতা অবলম্বন করে কী উপায়ে করোনা-সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, সে পন্থা খুঁজে বার করতে হবে দেশের সরকারকে।
আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত এয়ার ইন্ডিয়ার ৫ বিমানচালক-সহ ৭
সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আগামিকালের ভিডিয়ো কনফারেন্সের আগে রবিবার একটি বৈঠক সেরে নিয়েছেন ক্যাবিনেটসচিব গৌরব গৌবা। দেশের সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যসচিব ও স্বাস্থ্যসচিবদের সঙ্গে এ দিন করোনা নিয়ে ভিডিয়ো কনফারেন্স করেন তিনি। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে জোন-ভিত্তিক এলাকা ভাগ নিয়ে আপত্তি তুলেছে বহু রাজ্য।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)