রঘুরাম রাজন। —ফাইল চিত্র
লকডাউনে থমকে দেশ। কোন পথে ঘুরবে অর্থনীতির চাকা? এ বার তা নিয়ে মুখ খুললেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। তাঁর মতে, স্বাধীনতার পর দেশ এত বড় জরুরি অবস্থার মুখোমুখি হয়নি। এই অবস্থা থেকে মুক্তির দাওয়াই-ও দিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকারকে গরিব মানুষ ও বেতনভূক নয় এমন নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর হাতে অর্থ তুলে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন রাজন।
করোনা অতিমারির সঙ্গে যুঝতে থাকা ভারতের পরিস্থিতিকে ‘স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বড় সঙ্কট’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন রাজন। তাঁর মতে, দেশ ব্যাপক রাজস্ব ঘাটতির পথে এগিয়ে চলেছে। তাই এই সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসার রাস্তা হিসাবে, আমেরিকা ইউরোপের মতো না হলেও, গরিব মানুষের জন্য আরও বেশি টাকা খরচ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ব্লগে তিনি লিখেছেন, এমন পরিস্থিতিতে সরকার যদি প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করার উপর জোর দেয়, যাঁরা ইতিমধ্যেই প্রচুর কাজের চাপে রয়েছেন তাঁদেরকেই কাজে লাগানো হয়, তা হলে খুব কম কাজ হবে, অনেক দেরিও হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত ২৬ নার্স, ৩ চিকিৎসক, ‘সংক্রামক’ ঘোষিত হাসপাতাল
রাজনের মতে, কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত এমন সময়ে কাজ করতে পারছেন না এমন গরিব ও বেতনভুক নয় এমন নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর পাশে দাঁড়ানো, যাতে তাঁরা এই সময়ে লড়াই চালিয়ে যেতে পারেন। রাজন বলছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের একসঙ্গে এগিয়ে আসা উচিত, যাতে খুব দ্রুত সরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের যৌথ উদ্যোগ (খাবার, স্বাস্থ্য ও আশ্রয়ের মতো বিষয়গুলিতে) গড়ে তোলা যায়। এ ছাড়াও ওই সব দরিদ্র পরিবারগুলিকে বেসরকারি উদ্যোগ ও ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফারের আওতায় আনা যাতে তাঁরা পরের কয়েক মাস চালিয়ে নিতে পারেন।’’ তাঁর মতে, এই রাস্তায় না হাঁটলে, ‘‘তার ফল যে কী হতে পারে তা পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘটনাতেই দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। যদি মানুষ অন্য কোনও ভাবে বেঁচে থাকতে না পেরে, লকডাউন ভেঙে কাজকর্ম শুরু করেন তা হলে আরও একটা বিপর্যয় ঘটতে পারে।’’
রাজন দাবি করেছেন, ২০০৮-০৯ সালেও অর্থনীতি ধাক্কা খেয়েছিল। কিন্তু তখন অবস্থা এখনকার তুলনায় শক্তপোক্ত ছিল। সে সময় মানুষ কাজে যোগ দিচ্ছিলেন। কিন্তু এখন গোটা পরিস্থিতিই প্রতিকূল। তবে পরিস্থিতি হতাশার নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। তাঁর মতে, উচিত সমাধান ও অগ্রাধিকারকে গুরুত্ব দিলেই এই যুদ্ধে জয়লাভ করা যাবে। এ সময় সরকারকে বিরোধীদের কাছে যাওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন রাজন।
আরও পড়ুন: সামনে লম্বা লড়াই, করোনা নিয়ে দেশবাসীকে বার্তা প্রধানমন্ত্রীর
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার প্রাক্তন গভর্নর লিখেছেন, ‘‘এটা বলা হয়ে থাকে সঙ্কটে পড়লেই সংস্কারের পথে হাঁটে ভারত। আমাদের অর্থনীতি কতটা মজবুত বা ভঙ্গুর তা এই পরিস্থিতিতেই বোঝা যাবে এবং আমরা নজর দেব, অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)