গোষ্ঠী সংক্রমণ নেই ভারতে, মানল হু। ছবি: এএফপি।
এখনও ভারতে গোষ্ঠী সংক্রমণের আকার নেয়নি করোনা। নিজেদের ভুল স্বীকার করে জানিয়ে দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। নোভেল করোনার প্রকোপে বিশ্বের কোথায় কী পরিস্থিতি, তা নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে হু। তাতে ভারতে পরিস্থিতি তৃতীয় পর্যায় অর্থাৎ গোষ্ঠী সংক্রমণের পর্যায়ে রয়েছে বলে দেখানো হয়। তা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করলে শুক্রবার এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভুল স্বীকার করে নেন হু-র এক আধিকারিক। জানিয়ে দেন, ভারতে করোনা গণ্ডিবদ্ধ পর্যায়ে (ক্লাস্টার) পৌঁছে গেলেও তা এখনও গোষ্ঠী সংক্রমণের আকার ধারণ করেনি। রিপোর্টে তা ভুলবশত দেখানো হয়েছিল।
করোনা সংক্রমণকে মোট চারটি পর্যায়ে বেঁধে দিয়েছে হু, যেগুলি হল—নিশ্চিত ভাবে সংক্রমিতের সংখ্যা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি, বিক্ষিপ্ত সংক্রমণ, গণ্ডিবদ্ধ সংক্রমণ এবং গোষ্ঠী সংক্রমণ। গোষ্ঠী সংক্রমণ বলতে বোঝায়, যখন সংক্রমণ শুধু বিদেশফেরতদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। বরং অবাধ মেলামেশার কারণে স্থানীয় মানুষের মধ্যেও তা ছড়িয়ে পড়ে, যার কোনও হিসাব রাখা সম্ভব হয় না।
গত বছর ডিসেম্বরে চিনেই প্রথম করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়। হু-র কাছে সেই তথ্য পৌঁছনো থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ১০০ দিন পেরিয়েছে। সেই উপলক্ষেই ওই রিপোর্ট প্রকাশ করে হু। কিন্তু তাতে বিস্তর গলদ ধরা পড়ে। দেখা যায়, আক্রান্তের নিরিখে সদ্য ৬ হাজার পেরনো এবং মৃত্যুসংখ্যার নিরিখে ২০০ ছুঁইছুঁই ভারতে গোষ্ঠী সংক্রমণ দেখা দিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ মৃত্যুসংখ্যা ৩ হাজার পেরনো চিনকে রাখা হয়েছে গণ্ডিবদ্ধ সংক্রমণের আওতায়।
আরও পড়ুন: সারা বিশ্বের তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে চিন? ব্ল্যাকবেরির হ্যাকিং রিপোর্টে শঙ্কার ছায়া
আরও পড়ুন: অজানা-অনিশ্চয়তার খাদে তলিয়ে যাচ্ছে অর্থনীতি, শেষ কোথায় জানা নেই
ভারত সরকারের তরফেও তাদের এই রিপোর্ট খারিজ করা হয়। জানিয়ে দেওয়া হয়, এখনও তৃতীয় পর্যায়ে পৌঁছয়নি ভারত। এ দিন সকালে সাংবাদিক বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন। তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত ভারতে গোষ্ঠী সংক্রমণ দেখা দেয়নি। দেশের ৬০০ জেলার মধ্যে ৪০০টিতে কোভিড-১৯ ভাইরাসের কোনও প্রভাব পড়েনি। ১৩৩টি জেলাকে এই ভাইরাসের হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত করা গিয়েছে। তার পরই ভুল স্বীকার করে নেয় হু।
বিদেশফেরতদের হাত ধরেই জানুয়ারির শেষে ভারতে কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রবেশ। শুক্রবার পর্যন্ত সারা দেশে ৬ হাজার ৪১২ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ১৯৯ জন, যার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টাতেই ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে গত ২৪ মার্চ কেন্দ্রীয় সরকার ২১ দিনব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করাতেই সংক্রমণ অনেকাংশে ঠেকানো গিয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)