ছবি: সংগৃহীত।
ইউরোপের কয়েকটি দেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতেই নড়েচড়ে বসল ভারত সরকার। ওই টিকা দেওয়ার পর তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গভীর ভাবে পর্যালোচনা করে দেখবে ভারত। আগামী সপ্তাহ থেকে এই কাজ শুরু হবে বলে শনিবার জানিয়েছেন কোভিড-১৯ নিয়ে গঠিত জাতীয় টাস্ক ফোর্সের সদস্য এনকে অরোরা।
পর্যালোচনার কাজ শুরুর কথা বললেও অরোরার আশ্বাস, এই মুহূর্তে ওই টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে বিশেষ চিন্তার কারণ নেই। শনিবার সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, “টিকাকরণের পর দেশের অতি নগণ্য সংখ্যকের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ফলে এখনই চিন্তার কোনও কারণ নেই।” যদিও তিনি জানিয়েছেন যে প্রতিটি বিরূপ প্রতিক্রিয়াই খতিয়ে দেখা হবে। তাঁর কথায়, “টিকা নেওয়ার পর যে সমস্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঘটনা রিপোর্ট করা হচ্ছে, তার সবক’টিই ফের পর্যালোচনা হবে। তাতে রক্ত জমাট বাঁধার মতো কোনও সমস্যা হয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে।”
সম্প্রতি ডেনমার্ক, নরওয়ে, আইসল্যান্ড-সহ ইউরোপের ৮টি দেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেওয়ার পরই রক্ত জমাট বাঁধার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এশীয় অঞ্চলে তাইল্যান্ডেও এ ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। ডেনমার্ক, নরওয়ে, আইসল্যান্ড এবং তাইল্যান্ড সরকার ইতিমধ্যেই ওই টিকার প্রয়োগে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
এ দেশে অক্সফোর্ডের টিকা নেওয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াও প্রায় ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও অরোরার দাবি, “শুক্রবার পর্যন্ত যে ৫৯ থেকে ৬০টি মৃত্যুর ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে, তার সঙ্গে টিকা নেওয়ার সম্পর্ক নেই। সেগুলি সবই সমাপতন।” যদিও টিকাকরণের পর যাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে, সে সব রিপোর্টই ফের খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। বলেন, “প্রকৃতপক্ষে, সমস্ত ঘটনার তদন্ত করার পর তার ফলাফলের রিপোর্ট কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।”
মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৬ জানুয়ারি দেশ জুড়ে টিকাকরণ কর্মসূচি শুরুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত ২.৮২ কোটিরও বেশি টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শুক্রবার ২০ লক্ষ ৫৩ হাজার ৫৩৭ জন টিকা নিয়েছেন। যা ১ দিনে এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। তবে টিকাকরণের মাঝেই এ দেশে করোনার ব্রিটেন, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল এবং ভারতীয় প্রজাতির নতুন অবতারের সংক্রমণে বাড়ছে আশঙ্কা।