ছবি: রয়টার্স।
রাশিয়ায় তৈরি স্পুটনিক-ভি প্রতিষেধক এ দেশে উৎপাদন ও পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য অনুরোধ জানাল মস্কো।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, অন্যতম বন্ধু রাষ্ট্র রাশিয়া সম্প্রতি নয়াদিল্লির কাছে ওই আবেদন জানিয়েছে। যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে রাশিয়ার আবেদন মেনে নিলে অক্সফোর্ডের পরে দ্বিতীয় বিদেশি প্রতিষেধকের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হবে এ দেশে।
গত মাসের প্রথম সপ্তাহে রাশিয়া দাবি করে, তারা করোনা প্রতিষেধক তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু স্পুটনিক-ভি নামের ওই প্রতিষেধকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ওই প্রতিষেধকের মানবদেহে তৃতীয় দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ না করেই তা বাজারে ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন রুশ বিজ্ঞানীরা। তা ছাড়া ওই প্রতিষেধকটির গবেষণা সংক্রান্ত নানা খুঁটিনাটি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিজ্ঞানীদের একাংশ।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আরও পড়ুন: রাশিয়ার পর আমেরিকা? করোনা টিকা শীঘ্রই, বললেন ট্রাম্প
আরও পড়ুন: ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ না করে বাজারে কোভিড টিকা নয়, জানাল তিন মার্কিন ওষুধ কোম্পানি
যার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক মহলের একাংশে প্রতিষেধকটি নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে তা সত্ত্বেও একাধিক দেশ ওই প্রতিষেধকটি নিজেদের দেশের জনগণের উপর ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজই দেশের জনগণের ব্যবহারের জন্য স্পুটনিক-ভি প্রতিষেধক বাজারে ছেড়েছে রাশিয়া।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
ভারতে প্রতিষেধক কোন পর্যায়ে
• ভারত বায়োটেক: প্রথম পর্ব শেষ। দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে।
• জাইকোভ ডি: প্রথম পর্ব শেষ। দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছে।
• কোভিশিল্ড: সিরাম ও অক্সফোর্ড জুটির ওই টিকার তৃতীয় পর্ব দ্রুত শুরু হবে।
• স্পুটনিক-ভি: রাশিয়ার টিকার ভারতে প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা শুরু।
ভারত এ পর্যন্ত স্পুটনিক-ভি প্রতিষেধক প্রশ্নে নীরব থাকলেও সম্প্রতি ওই প্রতিষেধক এ দেশে উৎপাদন ও ভারতবাসীর উপরে তৃতীয় দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করতে চেয়ে আগ্রহ দেখায় মস্কো। আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সাপ্তাহিক সাংবাদিক সম্মেলনে নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ভি কে পল বলেন, ‘‘সম্প্রতি রাশিয়া আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভারতীয় সংস্থাগুলির মাধ্যমে তা উৎপাদন এবং এ দেশে মানবদেহে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। রাশিয়ার মতো বিশেষ বন্ধু দেশের পক্ষ থেকে পাওয়া প্রস্তাব গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ব্যাখ্যা, গোড়ায় রুশ প্রতিষেধক প্রশ্নে একাধিক অস্বচ্ছতা ছিল। তারা মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের গবেষণা সর্বসমক্ষে না আনায় ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। বর্তমানে ওই দুটি ধাপের তথ্য রাশিয়া প্রকাশ করায় ধোঁয়াশা অনেকটাই কেটে গিয়েছে। ভি কে পলের কথায়, ‘‘এখন রাশিয়া যদি তৃতীয় ধাপের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সফল ভাবে এ দেশে করতে চায়, তা হলে তা দু’দেশের জন্যই লাভজনক। রাশিয়া চাইছে, এ দেশের সংস্থার মাধ্যমে প্রতিষেধক তৈরি করতে। সিরাম সংস্থা মাসে ১০ কোটি টিকা তৈরিতে সক্ষম। ফলে রুশ টিকার এ দেশে সফল প্রয়োগ হলে সিরাম-সহ অন্য ভারতীয় সংস্থা সেই টিকা উৎপাদন করতেই পারে। এতে খরচ কম হবে।’’
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)