corona

পুজো কী ভাবে, নির্দেশিকা প্রকাশ

রাজ্য সরকারগুলিকে যথাসম্ভব সক্রিয় ভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলার পাশাপাশি দেশের মানুষকে উৎসবের দিনগুলিতে করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রাখতে বলা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২০ ০৫:০০
Share:

ফাইল চিত্র

কন্টেনমেন্ট জ়োনে কোনও পুজো করা যাবে না বলে জানিয়ে দিল কেন্দ্র। এমনকি, কন্টেনমেন্ট জ়োনের বাসিন্দাদের এ যাত্রায় ঘর থেকেই উৎসবে শামিল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর—এই তিন মাসে দুর্গা পুজো, দশেরার দিন রামলীলা, দিওয়ালি, ছটের মতো অনুষ্ঠান থাকায় গোটা দেশে সংক্রমণ এক ধাক্কায় বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তা রুখতে রাজ্য সরকারগুলিকে যথাসম্ভব সক্রিয় ভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলার পাশাপাশি দেশের মানুষকে উৎসবের দিনগুলিতে করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রাখতে বলা হয়েছে।

Advertisement

কেরলে ওনাম উৎসবের পরেই এক মাসের মধ্যে সংক্রমণ অন্তত চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কেরলের সেই ছবি পশ্চিমবঙ্গে দুর্গাপুজোর পরে হতে পারে বলে আশঙ্কায় রয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। দশেরার দিন উত্তর ভারতের রামলীলা অনুষ্ঠান দেখতে মানুষের ভিড়ও কেন্দ্রের কাছে চিন্তার বড় কারণ। সেই দুর্গাপুজো-রামলীলার সময়ে যাতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকে, তার জন্য নির্দেশিকা জারি করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

যে এলাকায় পুজো, মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সভা-প্রদর্শনী হবে, সেই চত্বরটি চার দিক থেকে ঘিরে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রবেশ ও বাইরে যাওয়ার পথ আলাদা রাখতে হবে। প্রয়োজনে একাধিক প্রবেশ-বাইরে যাওয়ার পথ রাখা ও সেগুলির মধ্যে যাতে বাতাস চলাচল করে সে দিকে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: কেনাকাটার ভিড়ে বড় বিপদের আশঙ্কা পুজোর আগেই​

প্রবেশ পথে হাত স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা যেমন রাখতে হবে তেমনই থার্মাল গান বা থার্মাল স্ক্রিনিং থাকতে হবে। মণ্ডপগুলিতে স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করতে হবে, যাঁদের উপর দর্শকদের শরীরের তাপমাত্রা মাপার দায়িত্ব থাকবে। তাঁরা নিজেরা যেমন মাস্ক পরে থাকবেন তেমনই মাস্ক ছাড়া কেউ যাতে প্রবেশ করতে না পারেন, সে দিকে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে।

উৎসবের বিধি

• মন্দির বা ধর্মস্থানে ঢোকার আগে গাড়িতে জুতো খুলে রাখার পরামর্শ। একান্তই তা না হলে প্রত্যেকের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা।

• ছোঁয়া যাবে না প্রতিমা বা পবিত্র গ্রন্থ।

• মণ্ডপে ও মণ্ডপের বাইরে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা। প্রয়োজনে সিসি ক্যামেরার সাহায্য নেওয়া।

• প্রবেশ ও বাইরে যাওয়ার একাধিক পথ। প্রত্যেকটি প্রবেশ পথে স্যানিটাইজ়ার ও থার্মাল স্ক্যানার রাখতে হবে। বা থার্মাল গান নিয়ে স্বেচ্ছাসেবকরা থাকবেন।

• বয়স্ক, অন্তঃসত্ত্বা ও ছোটদের বাড়িতে থাকার পরামর্শ।

• মণ্ডপ চত্বর, রামলীলা ময়দানে করোনা সংক্রমণ রোখার প্রশ্নে প্রচার

• মণ্ডপ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে এমন স্থানে, ফুড কোর্টে পারস্পরিক দূরত্ব মেনে বসার ব্যবস্থা।

• লঙ্গরে স্বাস্থ্যবিধি

• কোনও ব্যক্তি সংক্রমিত ধরা পড়লে সেই চত্বর জীবাণুুমুক্ত করা।

নির্দেশিকা অনুযায়ী, থার্মাল স্ক্রিনিং-এ কারও তাপমাত্রা বেশি পাওয়া গেলে তাঁকে প্রবেশ করতে না দিয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়ার উপরে জোর দিতে হবে। স্বেচ্ছাসেবকেরা সুস্থ রয়েছেন কি না, ফি দিন সেই পরীক্ষা করতে হবে। এ ছাড়া প্রতিটি মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা রেখে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় থাকছে কি না, সে বিষয়ে নজরদারি করার কথা বলা হয়েছে। যদি কোনও ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েন, তার জন্য মণ্ডপের পাশে বাড়তি একটি কক্ষ রাখতে বলা হয়েছে। সে জন্য মণ্ডপ, অনুষ্ঠানস্থলের আয়তন প্রয়োজনে বাড়াতে বলা হয়েছে। ছোঁয়া যাবে না প্রতিমাও।

আরও পড়ুন: মানুষের ‘পাশেই’ পজ়িটিভ নেতারা​

পুজো বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যাতে কোনও ভাবেই একটি সময়ে ভিড় না হয়, সে দিকে বিশেষ ভাবে নজর রাখতে বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে পুজোর সময়ে জলসা করা যাবে না বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। পুজোর মণ্ডপ, বিসর্জন-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকারের বিধি প্রকাশিত হয়েছে। বিসর্জনের শোভাযাত্রায় যাতে নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে বেশি লোক না থাকেন এবং স্বল্প দূরত্বের মধ্যেই যাতে বিসর্জন করা সম্ভব হয়, সে বিষয়েও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। একান্তই যদি বিসর্জনস্থল দূরে হয়, সে ক্ষেত্রে শোভাযাত্রার সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement