প্রতীকী ছবি।
মানুষের থেকে পশুদের মধ্যে কি করোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে? আর যদি ছড়ায় তা হলে কি তা আরও ভয়াবহ রূপ নিয়ে পশুদের থেকে মানুষের মধ্যে ফের সংক্রমণ ঘটতে পারে? হায়দরাবাদের চিড়িয়াখানায় ৮ এশিয়ান সিংহ করোনা পজিটিভ হওয়ার পর এই প্রশ্নইগুলিই এখন চিকিৎসকদের নতুন করে ভাবাচ্ছে।
সম্প্রতি হায়দরাবাদের চিড়িয়াখানার ৮ সিংহের মধ্যে কোভিড সংক্রমণ মিলেছে। হাঁচি, খাবারে অনীহা ইত্যাদি লক্ষণ দেখেই নাক এবং গলা থেকে নমুনা নিয়ে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করানো হয়েছিল সিংহগুলোর। এই প্রথম ভারতে চিড়িয়াখানার কোনও পশুর মধ্যে করোনা সংক্রমণ মিলল। এই বিষয়টিই কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বিশেষজ্ঞদের। যদিও মানুষের থেকেই সিংহগুলি সংক্রামিত হয়েছে কি না তা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা কিন্তু তাঁদের কাছে উদ্বিগ্নের বিষয় হল, মানুষের থেকে পশুদের সংক্রমণ ঘটলে এবং সেই ভাইরাস পশুদেহে রূপ বদলে (মিউটেশন ঘটিয়ে) পুনরায় মানুষের শরীরে প্রবেশ করে তা হলে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্য সিংহগুলিকে নজরে রাখা খুব দরকার বলে মনে করেন সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজির অধিকর্তা চিকিৎসক রাকেশ মিশ্র।
তিনি জানিয়েছেন, সিংহগুলিকে নজরে রাখা হয়েছে। যাতে তাদের থেকে আর কোনও পশুর মধ্যে সংক্রমণ না ছড়িয়ে পড়ে তার জন্য তাদের আলাদা করে রাখা হয়েছে। মানুষের মতো একই চিকিৎসা চলছে তাদের। পাশাপাশি ভাইরাল লোড যাচাইয়েরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।
পশুদেহে সংক্রমণের প্রমাণ মেলায় একটি বিষয় সাধারণ মানুষের ততধিক উদ্বিগ্নের কারণ হয়েছে দাঁড়িয়েছে। সেটি হল পোষ্যদেরও কি তা হলে সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর এখনও সঠিক ভাবে দিতে পারেননি বিশেষজ্ঞরা। এই নিয়ে গবেষণা চলছে। তবে নয়াদিল্লির এক প্রাণী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিপিন শর্মার মতে, সে সম্ভাবনা কম। কারণ কুকুর এবং বিড়ালের অসম্ভব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তাঁর মতে, কুকুর-বিড়ালের সহজাত এবং অর্জিত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই শক্তিশালী। তাই এই ভাইরাস তাদের শরীরে ঢুকলেও প্রভাব ফেলতে পারেনি এখনও পর্যন্ত। যার জন্য মানুষের সংস্পর্শে থাকা সত্ত্বেও তারা সংক্রামিত হচ্ছে না।