এইচ বসন্তকুমার। —ফাইল চিত্র।
নোভেল করোনা তখনও মহামারির আকার ধারণ করেনি দেশে। আগে ভাগে তা নিয়ে সরকারকে সতর্ক করতে চেয়েছিলেন তিনি। সংসদে দাঁড়িয়ে তাই জরুরি পদক্ষেপ করতে আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু সময়ের অভাবে মাঝপথে তাঁর সেই বক্তব্য কেটে দেওয়া হয়। মাত্র এক মিনিট সময় চাইতে গেলে তাঁর মাইকটিই বন্ধ করে দেওয়া হয়। করোনার প্রকোপে এ বার প্রাণ গেল তামিলনাড়ুর কংগ্রেস সাংসদ সেই এইচ বসন্তকুমারের।
সপ্তাহ তিনেক আগে নোভেল করোনায় আক্রান্ত হন ৭০ বছরের বসন্তকুমার। বিগত ১৮ দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। শুক্রবার শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বর্ষীয়ান সাংসদ। তাঁর প্রয়াণের পরেই বছরের গোড়ার দিকে সংসদে করোনা নিয়ে তাঁর বক্তৃতার একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে তিন মাসের জন্য ঋণ মকুবের পাশাপাশি একাধিক পদক্ষেপ করতে সরকারকে আর্জি জানাতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
গত মার্চ মাসে সংসদের ওই অধিবেশনে বসন্তকুমার বলেন, ‘‘করোনা যে ভাবে গোটা দেশকে গ্রাস করছে, তাতে অবিলম্বে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করা উচিত আমাদের। ছোট ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষের ঋণ অন্তত তিন মাসের জন্য মকুব করে দেওয়া হোক। দিনমজুরদের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। সরকারের কাছে আমার আর্জি, প্রত্যেক পরিবারকে কম পক্ষে দু’হাজার টাকা করে দেওয়া হোক।’’
বসন্তকুমারের মৃত্যুর পর এই ভিডিয়োই ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আরও পড়ুন: এক দেশ এক ভোট-এ অগ্রগতি, একই ভোটার তালিকা তৈরির প্রস্তুতি
কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ায় বক্তব্য চলাকালীন মাঝপথেই বসন্তকুমারকে থামিয়ে দেন লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। তাঁর কাছে আরও এক মিনিট সময় চান বসন্তকুমার। কিন্তু তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়কে কথা শুরু করতে বলে বসন্তকুমারের মাইক বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন ওম বিড়লা। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সেই সময় বসন্তকুমার যে যে পদক্ষেপ করতে আর্জি জানিয়েছিলেন সরকারকে, দেরিতে হলেও পরবর্তী কালে তার অধিকাংশই সরকারি ঘোষণায় জায়গা পায়।
আরও পড়ুন: কমলার চেয়ে অনেক বেশি যোগ্য ইভাঙ্কা, দাবি ট্রাম্পের
গত ১০ অগস্ট বসন্তকুমার নিজেই নোভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হন। চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। সেই অবস্থাতেই সম্প্রতি নিউমোনিয়া ধরা পড়ে তাঁর। শেষমেশ শুক্রবার তিনি প্রয়াত হন। স্ত্রী এবং এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে বসন্তকুমারের। তাঁর ছেলে পেশায় অভিনেতা। বসন্তকুমারের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।